টঙ্গীতে ভূমিদস্যু চক্রের আতঙ্কে জমির মালিক

 

স্টাফ রিপোর্টার,টঙ্গী থেকে: টঙ্গীতে ভূমিদস্যু চক্রের আতঙ্কে জমির
মালিক। চক্রটি আদালতের নিষেধাজ্ঞা মানছেনা। এমপি পরিবারকে ব্যবহার
করে কোটি টাকার জমি দখলের অপতৎপরতা চালাচ্ছে ওই প্রভাবশালী মহল।
কোটি টাকার জমি কখন বেদখল হয়ে যায় এমন আতঙ্কে রয়েছে জমির
মালিক। জমি বেদখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্খায় দিশেহারা হয়ে স্থানীয়
প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন স্ত্রীর ক্রয় করা জমি
রক্ষায় স্বামী কুদ্দুস পাঠান। রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে তাকে।
কুদ্দুস পাঠান অভিযোগ করে বলেন, সস্ত্রীক চিকিৎসার্থে ভারতে গেলে
জমি জবর দখলের চেষ্টা চালায় অস্ত্রমামলার আসামী ও ভূমিদস্যু সেলিম
পাঠান চক্রের সদস্যরা। স্থানীয় পাগাড় এলাকার ঢাকা ডায়িং রোডের
ঘটনা এটি। বেদখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্খায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
সহযোগিতা জন্য স্থানীয় থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি)
করা হয়েছে।
জমির মালিক টঙ্গী থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা
কমিটির ৪৩ নং ওয়ার্ড সমন্বয়ক আব্দুল কুদ্দুস পাঠান জানান, তিনি
স্ত্রীর কেনা জমিতে দোকান ভাড়া দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে শান্তিপুর্ণভাবে
ভোগদখল করে আসছেন। গত ৯জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য সস্ত্রীক ভারতে
অবস্থানকালে এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও মাদক চক্র ভয়ভীতি দেখিয়ে
আমার ভাড়াটিয়াদের চলে যেতে বলে। না গেলে ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী
দিয়ে সেখানে হামলা চালিয়ে দোকানপাট ভাংচুর করে এবং প্রাণনাশের
হুমকি দিয়ে ভাড়াটিয়াদের এই এলাকা ছেড়ে যেতে বলে। তিনি খবর
পেয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে এসে জমিটি পুনরুদ্ধার করেন
এবং বেআইনী অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর
আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত জমিতে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য
টঙ্গী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন এবং ১৪৫ জারি করেন এবং
বিবাদীদেরকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।
এঘটনা শুনে স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল বিষয়টি
সুরাহা করার জন্য এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেন এবং উভয়পক্ষের
কাগজপত্র পর্যালোচনা ও আইনী মতামত নিয়ে সমস্যা সমাধানের

নির্দেশ দেন। এমপির নির্দেশে এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তিরা উভয় পক্ষের
কাগজ দেখে পর্যালোচনা করে ক্রয়সুত্রে দখলীয় সম্পত্তির মালিক রুমা
পারভীনের পক্ষে রায় দেন। এই রায়কে উপেক্ষা করে সেলিম পাঠানের
নেতৃত্বে ভূমিদস্যু চক্রটি এমপির আত্মীয় ও মহিলা আওয়ামীলীগ
নেত্রীকে ব্যবহার করে তার গাড়ি চালক শহীদ ড্রাইভার ও ভাশুর পুত্র মনির
হোসেন বাবুর সহযোগিতায় ওইচক্রটি পুনরায় জমি জবর দখলের চেষ্টা
চালাচ্ছে। কুদ্দুস পাঠান আরো বলেন, এলাকার ভূমিদস্যু সেলিম পাঠান
টঙ্গীর একসময়ের টপটেরর ভূইয়া বাবুর সহযোগী ছিল। সে টঙ্গী থানার
একাধিক মামলাসহ (নং-১২(০১)০৫) অস্ত্র আইনের ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত
একজন আসামী। তার বিরুদ্ধে এলাকায় ইতিপূর্বে আরো কয়েকটি
জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। দখলবাজিই তার মুল পেশা। এছাড়া তার অন্য
কোন পেশা নেই।
তিনি বলেন, ভূমিদস্যু চক্রটি স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশনাকে
উপেক্ষা করে সালিশী সিদ্ধান্ত মানছে না, আদালতের নিষেধাজ্ঞাকেও মানে
না, পুলিশের নির্দেশ মানে না, আইন মানে না, সমাজ মানে না। আমার
মনে হয় এমপি সাহেব ও তাদের কাছে অসহায়।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সেলিম পাঠান বলেন, আমার বিরুদ্ধে
কোথাও কোন মামলা নেই। আমি কখনো কারো জমি জবর দখল করেছি
এমন ইতিহাস নাই।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিবদমান জমির প্রধান সালিশদার মো.
জামাল উদ্দিন খান বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশে আমরা তিন
সদস্য বিশিষ্ট সালিশীকার তিন মাসব্যাপী তদন্তে এই জমির ক্রয়সূত্রে
বৈধ মালিক এবং ভোগ দখলদার আব্দুল কুদ্দুস পাঠানের স্ত্রী রুমানা
পারভীন এটাই প্রমাণিত হয়েছে। অন্য যারা জমিটি দখল করতে চায় তারা
নিজেদের স্বার্থে তাদের পেশীশক্তির অপব্যবহার করে ফায়দা লুটার চেষ্টা
করছে।
মনির হোসেন বাবু বলেন, এক শর্তে জমিটি আক্তার ভানুর কাছ থেকে
অর্ধেক দামে বায়না করেছি। শর্তটি কি। জানতে চাইলে তিনি বলেন
দখলে যেতে পারলে টাকা দেয়া হবে। আরো কিছু আছে সব কথা এখন
বলা যাবেনা। পরে বলব।
টঙ্গী থানার আফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন বলেন,আমি
ঘটনাটি শুনে এই জমির উপর আদালতের নির্দেশ থাকায় পুলিশ
পাঠিয়েছিলাম।
স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল পবিত্র ওমরা পালনে সৌদি
আরবে অবস্থান করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

#
টঙ্গী থেকে এম.এ হায়দার সরকার

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment