কলাপাড়ায় ষাট টাকা বকেয়ার জন্য পরীক্ষা দিতে পারেনি শিক্ষার্থী মমতাজ, বই বিতরনে ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগ ॥

মোয়াজ্জেম হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
মাত্র ষাট টাকা বকেয়ার জন্য স্কুল পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে দেয়া হয়নি ষষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী মমতাজকে। সামান্য বেতন বকেয়া থাকায় এমন আবস্থা হয়েছে ১৮ শিক্ষার্থীর।  অংশগ্রহন করতে না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে এসব শিক্ষার্থীরা চলমান অর্ধ-বার্ষিক ও প্রাক বাছনিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারেনি। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ডালবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এমন কাজে হতবাক ও ক্ষুব্ধ আবিভাবক ও এলকাবাসী।   জানা গেছে, ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের অর্ধ-বার্ষিক ও প্রাক বাছনিক পরীক্ষায় ৯ম শ্রেনীর ২জন, দশম শ্রেনীর ১৫জন এবং ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ১জন পরীক্ষার্থীর বিদ্যালয়ের  বেতন ও সেশনফি’র টাকা বকেয়া থাকায় ১ জুলাই রবিবার অনুষ্ঠিত ইংরেজী প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারেনি। ভ’ক্তোভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, অন্যান্য বিদ্যালয়ের  চেয়ে ডালবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বেতন অনেক বেশি নেয়া হচ্ছে। সেশনফি ছাড়াও বই বিতরনের সময় টাকা নেয়া হয়েছে।  অতিরিক্ত ক্লাশের নামে চলছে কোচিং বানিজ্য। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির নামে দিন প্রতি ২০ টাকা করে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। বছরে অর্ধবার্ষিকী এবং বার্ষিক এই দুটি পরিক্ষা নেয়ার বিধান থাকলেও তা উপেক্ষা করে ৩টি করে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, শিক্ষকদের কথামত অতিরিক্ত ক্লাশের নামে কোচিং করতে না চাইলে মারধর করার হুমকি দিয়ে থাকেন সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। ৬ষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী মমতাজ জানায়, তার বাবা একজন ভ্যানচালক। মাত্র ষাট টাকার জন্য তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে দেয়া হয়নি। ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সোহাগ গাজী, ৮ম শ্রেনীর হাসিব, আরিফ হোসেন, ৭ম শ্রেনীর নাজমুল, সাকিব, সালমানসহ  আরো অনেক শিক্ষর্থী জানায়, সকল শিক্ষার্থী  সেশনফি বাদেই ৫ থেকে ৬ শত টাকা নিয়ে নতুন বই দেয়া হয়েছে।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, ১৯৭৩ সালে স্থাপিত এ বিদ্যালয়টির সুনাম এখন ২/৩জন সুবিধাবাদী, উচ্চাভিলাসী শিক্ষকের কারনে নষ্ট হতে চলেছে। শিক্ষকদের খামখেয়ালীপনা আর  অতিরিক্ত চাহিদা এখন চরম পর্যায় পৌছে গেছে। তবে এসকল অভিযোগ অস্বীকার করে ডালবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিত্ত কুমার হাওলাদার জানান, যে সকল পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়নি তারা বকেয়া টাকা পরিশোধ করেনি। পরে তাদের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তারা আসেনি।  পরবর্তীতে তাদের এই একটি পরীক্ষা নেয়া হবে। বই বিতরনে টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেশনফিসহ টাকা নেয়া হয়েছে। সে টাকার রিসিভ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। যারা বলছেন তারা না বুঝেই বলছেন। আর বেতনের বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ নির্ধারন করেছেন। তবে প্রতিদিন অনুপস্থিতির জন্য বিশ টাকা হারে জরিমানার টাকা কোন খাতে ব্যয় করেন তার কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তিনি।
কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদ হোসেন জানান, বিষয়গুলো জরুরীভিত্তিতে তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমানিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment