সুন্দরবনের ২২ হরিন শিকারের নেপথ্যে গোপন রহস্য রাঘোব বোয়ালরা ধরা ছোয়ার বাইরে

 ষ্টাফ রিপোর্টার :
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলাধীন সুন্দরবন থেকে ২২ হরিণ শিকারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, গত ০৫ ই জুলাই ১৬ ক্যান বরফ নিয়ে জাতীয় পার্টির সাতক্ষীরা -০৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশি কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দোকাটি গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার মোড়ল শিকারের উদ্দ্যোশে পশ্চিম সুন্দরবনের চুনকুড়ি নদী থেকে গভীর সুন্দরবনের দিকে রওয়ানা হয়। এ সময় তার সাথে উপজেলার রমজাননগর গ্রামের মৃত হামিদ সরদারের পুত্র মোঃ আনারুল ইসলাম ( শিকারী ) , পাতাখালী গ্রামের আজিজ শিকারী ও আব্দুস সাত্তার মোড়লের ০৫ জন কমচারী ও ০২ জন ড্রাইভার একটি ট্রলারযোগে ০৬ টি দোনালা বন্দুক , ০১ টি পিস্তলসহ গভীর সুন্দরবনের দিকে রওয়ানা হয় বলে প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর একটি সূত্র বলছেন, শিকারীদের ঐ ট্রলারে শ্যামনগর থানার এস,আই লিটন , হাবিব , এ,এস,আই মামুন ২ , ফলজুলসহ সঙ্গীয় ফোসও ছিল। তারা গত রবিবার দিবাগত রাতে গভীর সুন্দরবনে ২২ টি হরিণ শিকার করে যার মধ্যে ২ টি হরিণ রান্না করে সাবার করে বাকি ২০ টি হরিণ নিয়ে ফেরার পথে সুন্দরবনের চালতে বাড়িয়া নামক স্থানে কোষ্ট গার্ড ও বন বিভাগের যৌথ অভিযানের মুখে তাদেরকে আটক করা হয়। সে সময় পুলিশ টিম কোষ্ট গার্ড ও বন বিভাগের কমকতাদের জানায় , তারা শ্যামনগর থানা থেকে সিসি নিয়ে সুন্দরবনের বনদস্যু জাকির বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযানে আসে। এ সময় তারা শিকারীদের এই ট্রলারটি জব্দ করেছে। পুলিশটিম আরও দাবি করে আব্দুস সাত্তার মোড়লসহ ০২ জন বাদে বাকি সবায় পুলিশের সোর্স । অবশেষে মুনজুর ও মহিবুল্যাহ ০২জনকে গ্রেফতার , ০৩ টি বন্ধুক ও ০৩ টি হরিণ উদ্ধার দেখিয়ে তাদের শ্যামনগর থানায় সপদ করা হয়। এ ঘটনার বিষয়ে কৈখালী কোষ্ট গার্ডের পেডি অফিসারের মোবাইল নং ০১৭৬৬৬৯০৪৯৭ এ এই প্রতিবেদক ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন , গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পশ্চিম সুন্দরবনের চালতে বাড়িয়া নামক স্থানে ০২ টি ট্রলার আসতে দেখে তাদেরকে আমরা থামানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তারা দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমরা তাদের কাছাকাছি পৌছাতে পুলিশ শিকারী ট্রলার আটক করেছে বলে জানায় সে সময় পুলিশ তাদের কে শিকারীর ট্রলারের পাশে যেতে দেননি। কোষ্ট গার্ডের ঐ কর্মকর্তা আরও জানান , ঐ ট্রলারে থাকা বর্তমান গ্রেফতারকৃত ০২ জন বাদে বাকিরা পুলিশের সোস এবং এই অভিযানটি কোষ্ট গার্ড , পুলিশ ও বন বিভাগের যৌথ অভিযান দেখাতে বলা হয়। কোষ্ট গার্ডের এখতায়ারাধীন এলাকায় পুলিশি অভিযানে কোষ্ট গাডকে আগে থেকে কোন তথ্য দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন , না আমোদেরকে আগে থেকে এ ধরনের কোন তথ্য দেওয়া হয়নি এমনকি ঐ সময় ট্রলার , অস্ত্র , হরিণ ও শিকারীসহ ছবি নিতে ও বাধা প্রদান করা হয়। চাঞ্চল্যকর ২২ হরিণ শিকারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে কোটি টাকার ছড়াছড়ি হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর্ন্তজাতিক মাফিয়া ও তাদের এ দেশীয় এজেন্টরা ২২ হরিণ শিকার ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয় সূত্র গুলো এ ঘটনার বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তারা এ প্রতিবেদকের কাছে তাদের নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন , তাদের নাম প্রকাশ করা হলে তাদের জীবনহানীর আশাংকা রয়েছে। ঘটনার বিষয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( ডিএফও) এর ০১৭১২৩৩৯৩৫৬ নং মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন , এ অভিযানটি পুলিশের ফলো অভিযান ছিল। সংরক্ষিত বনে অভিযান চালাতে বন বিভাগকে অবগত করানোর দরকার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন , পুলিশ ক্যান ডু ড্যাট ( পুলিশ এটি করতে পারে )। এ বিষয়ে ওসি শ্যামনগর থানার সাথে কথা হলে তিনি বলেন , পুলিশের অভিযানে ০৩ টি বন্ধুক , ০৩ টি হরিণসহ মুনজুর ও মহিবুল্ল্যাহ নামক ০২ জন হরিণ শিকারীকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে শ্যামনগর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান। কোষ্ট গার্ড কর্মকর্তার অভিযোগ (পুলিশ ছবি নিতে বা ট্রলার তল্লাশিতে বাঁধা দেওয়া) বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন , এ ধরনের অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। তাছাড়া ঐ সময় ০২ জন চোরা শিকারী ছাড়া আর কেহ ঐ ট্রলারে ছিল না বা পুলিশের সোর্স বলেও কেউ ছিল না। অপর এক সূত্রে জানা যায় , আটককৃত ০২ জন আব্দুস সাত্তার মোড়লের কর্মচারী । এ বিষয়য়ে আব্দুস সাত্তার মোড়লের সাথে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে একটি মহল। সংরক্ষিত সুন্দরবনে চোরা শিকারীরা ২২ হরিণ শিকার করে যার কোন তথ্যই বন বিভাগের জানার বাইরে এমনটি হতে থাকলে অচিরেই সুন্দরবন হরিণ শূন্য হয়ে যাবে বলে মনে করছেন এলাকার শুধীমহল।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment