জগন্নাথপুরে নিখোঁজ যুবক “শাহজাহান”কে হত্যা করেছে ঘাতকরা, গ্রেফতার-৩

মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি,জগন্নাথপুর(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ 
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার  দ্বিঘলবাগ গ্রামের নিখোঁজ যুবক শাহজাহান আলীকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে অপহরনের পর একই গ্রামের ঘাতক লিটন,ফুরুক ও সুহিন নির্মমভাবে হত্যা করেছে বলে জানাগেছে। রোববার (১৪ই জুলাই) সুনামগঞ্জ আদালতে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে, দ্বিঘলবাগ (কালাইজোড়া) গ্রাম নিবাসী মৃত ইউনুছ উল্লার ছেলে আল আমিন ওরফে লিটন, একই গ্রামের মৃত আবরুজ মিয়ার ছেলে ফুরুক মিয়া ও উত্তর কালনিচর গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে সুহিন মিয়া।
সুত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলাধীন জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দী ইউনিয়নের দ্বিঘলবাগ গ্রাম নিবাসী মৃত মদরিছ আলীর ছেলে শাহজাহান আলী বিগত ২২শে মার্চ দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় তার বড় ভাই আব্দুল সামাদ জগন্নাথপুর থানায় সাধারন ডায়েরী করেন ( ডায়েরী  নাম্বার
 ৯২৭, তারিখঃ ২৩/০৫/১৮ইং। নিখোঁজ শাহজাহানকে উদ্ধার করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আতিকুল আলম খন্দকার প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত শুরু করেন। সাধারন ডায়েরী মোতাবেক  তদন্তের এক পর্যায়ে নিখোঁজ শাহজাহান আলীকে সংঙ্গবদ্ধ ঘাতক চক্র অপহরন করেছে মর্মে তথ্য প্রমান পাওয়ায় পরবর্তীতে তার ভাই আব্দুল সামাদ বাদী হয়ে কয়েক জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন কে আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন।এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার (১৩ই জুলাই) রাতে ঘটনায় জড়িত আসামী আল অমিন ওরফে লিটন ও সুহিন মিয়াকে গ্রেফতার করে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ।
পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে কথিত উল্লেখিত ঘাতকরা শাহজাহান আলীকে অপহরণ করে  হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে। পরে পুলিশ ফুরুককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত তিন আসামীকে সুনামগঞ্জ আদালতে হাজির করা হলে আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক শাহজাহান আলী অপহরণ ও হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
জগন্নাথপুর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে স্থানীয় গনমাধ্যমে পাঠানো ই-মেইল বার্তা থেকে জানা যায়. শাহজাহান আলীর সঙ্গে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে তার আপন ভগ্নীপতি একই গ্রামের মৃত আবরুজ মিয়ার ছেলে ফরুক মিয়ার বিরোধ এবং একই এলাকার আল আমিন ওরফে লিটনের সঙ্গেও জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে লিটন ও ফুরুক মিয়ার পরিকল্পনায় অনুযায়ী শাহজাহানকে খুন করার সিন্ধান্ত হয়। হত্যাকান্ড বাস্তবায়নে লিটন চার লাখ টাকা অর্থায়ন করে। তাদের পূর্ব পরিকল্পা মোতাবেক গত ২২ মার্চ রাত ৯ ঘটিকার দিকে হত্যাকান্ডে জড়িত এক সহযোগী (তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তার নাম প্রকাশ করেনি) শাহজাহানকে স্থানীয় কালাইনজোড়া বাজারে ডেকে নিয়ে আসে। পরে আসামী লিটন, সুহিন, ফুরুখসহ ৬/৭ জন ব্যক্তি ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে শাহজাহানকে নারীর প্রলোভন দেখিয়ে লিটনের নানার বাড়ি রৌয়াইল গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে তারা চায়ের সাথে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে শাহজাহানকে অসেচতন করে। এর পর রশি দ্বারা গলায় শ্বাস রোধ হত্যা করে এবং লাশ পাশ্ববর্তী কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ শাহজাহানের ভগ্নীপতি ফরুককে আটক করে রোববার সুনামগঞ্জ আদালতে প্রেরন করে।
অভিযানে অংশ নেয়া জগন্নাথপুর থানার এস আই আই সাইফুল আলম জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরেই ঘাতকরা শাহজাহান আলীকে প্রথমে অপহরণ করে পরে  হত্যা করেছে। বিজ্ঞ আদালতে গ্রেফতারকৃত তিন আসামী হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তবে নিহত যুবকের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment