ষাঁড়ের মূল্য ১৬ লাখ!

ষাঁড়ের মূল্য ১৬ লাখ টাকা! অবাক হওয়ার মতো হলেও এক কৃষাণী তার পালিত ষাঁড়টির মূল্য হাঁকাচ্ছেন ১৬ লাখ টাকা। গাজীপুরের কালিগঞ্জের এক কৃষাণী রেবেকা বেগম ছোট্ট ষাঁড়ের বাচ্চা এনে শখ করে পালন করে এতো বড় করেছেন। এ বছর কোরবানির ঈদে বাজারে তুলবেন কৃষাণী রেবেকা। তবে বাজারে তোলার আগেই বাড়িতে দেখতে আসা ক্রেতাদের নিকট মূল্য হাঁকিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। আর এতো মূল্যবান ষাঁড়টি দেখতে গাজীপুরের কালীগঞ্জের বক্তারপুর ইউনিয়নের ভাটিরা গ্রামে এখন ভিড় জমিয়েছে সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, গাজীপুরের কালীগঞ্জের বক্তারপুর ইউনিয়নের ভাটিরা গ্রামের সৌদি প্রবাসী আবুবকর মাঝির স্ত্রী পাশের গ্রাম থেকে ৮ মাস বয়সী একটি বিদেশী ফ্রীজাম জাতের ষাঁড়ের বাচ্চা কিনে আনেন। পরে যত্নাদি করে পালন করতে থাকেন। বাড়ির লোকজন আদর করে ষাড়ের বাচ্চাটিকে ‘লক্ষ্মী বাবু’ বলে ডাকে।

দুই বছর লালন-পালনের পর ছোট্ট ষাঁড়টি এখন বড় হয়েছে। আর এতোটাই বড় হয়েছে যে, আশপাশের ১০-১২ গ্রামে এমন বড় ষাঁড় নেই। শুধু ১০-১২ গ্রাম নয়, আশপাশের কয়েকটি উপজেলায়ও দেখা মিলেনা। এখন এই ষাঁড় দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করছেন রেবেকার বাড়িতে। কেউ কেউ আবার শহর থেকে গাড়ি নিয়ে ছুটে আসছেন ষাঁড় (লক্ষ্মী বাবুকে) ক্রয় করতে। তবে মালিক রেবেকার মনপুত না হওয়ায় এখনও বিক্রি করেননি।

রেবেকা বেগম বলেন, স্বামী প্রবাসে থাকেন। তার একার রোজগারে সংসার খুব একটা ভালো চলছিল না। তাই শখের বসে হলেও মূলত স্বামী রোজগারের সাথে খানিকটা সহযোগীতার মনোভাব নিয়েই তিনি ষাঁড়টি লালন-পালন শুরু করেন। প্রতিদিন খাবার তালিকায় ভূষি, সবজি, ফল ছাড়াও আছে সবুজ ঘাস। দুই বছর ধরে ষাঁড়টিকে লালন-পালন করছেন রেবেকা। তবে আল্লাহর রহমতে একদিনও অসুস্থ্য হয়নি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের লোকজন নিয়মত বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। তারা মূলত আসতেন ষাড়টির সঠিক পরিচর্যা হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য।

তিনি আরো বলেন, প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছে ষাঁড়টিকে দেখার জন্য। তবে তিনি একেবারেই বিরক্ত হচ্ছেন না। বরং যারা আসছেন দেখতে তাদের সবাইকে দেখাতে সহযোগীতা করছেন। ঘরের বাহির হচ্ছে না ষাড়টি। ঘরেই নিয়ম করে সব পরিচর্যা করা হচ্ছে। আসছে ঈদে বিক্রি করা হবে ষাড়টিকে। রেবেকার প্রত্যাশা ১৬ লক্ষ টাকা। তবে তার লালন-পালনে বড় হয়ে উঠা প্রিয় পশুটিকে প্রিয় মনে যে কোরবানি করবেন সে ক্ষেত্রে রেবেকা তার চাহিদা একটু কম-বেশি করবেন বলে জানান। তবে সেটা দু’পক্ষের আলোচনার মাধ্যমেই হতে হবে।

প্রবাসী আবুবকর মাঝি ও রেবেকার সংসার জীবনে ২ মেয়ে ১ ছেলে। বাড়ির দুই ছেলে মেয়ের যত্ন-আত্তি যেভাবে করেন ঠিক তেমনই যত্ন-আত্তি করছেন ষাঁড়টিকে। নিয়ম করে গোসল করানো, খাওয়ানো, অসুস্থ্য হলে ডাক্তার দেখানো, ঔষধ খায়ানো, একটু গরম পড়লে বাতাসের ব্যবস্থা এর সবই করছেন রেবেকা।

এলাকাবাসী জানায়, এত বড় বিশালাকৃতির ষাঁড় আশপাশের কোন উপজেলা বা জেলায় নেই। প্রায় ৩৫ মন ওজনের এই ষাঁড়টি এবারের ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসা গরুর হাটের প্রধান আকর্ষণ হতে পারে। তবে ষাঁড়টি ক্রয় করতে ক্রেতারা যেভাবে বাড়িতে ছুটে আসছে তাতে মনে হচ্ছে কোনো হাটের দেখা না-ও মিলতে পারে ষাঁড়টির। কারণ এত বড় বিশালাকৃতির ষাঁড় যে কারো পছন্দ হতে বাধ্য। তাই কেউ হয়তো বা টাকা পয়সার কথা চিন্তা না করে ত্যাগের মহিমায় নিজের টাকায় কেনা প্রিয় পশুটিই কোরবানি করবেন।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment