এসব প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে টনক নড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের । ঐসব প্রকাশিত প্রতিবেদনের সত্যতা থাকায় সংশ্লিষ্টরা সংবাদগুলোর প্রতিবাদ না করে উল্টো পথে হাঁটতে থাকে । এরই ধারাবাহিকতায় সাংবাদিকদের কলম আটকে দিতে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে ।
এই মামলার আসামি করা হয়েছে দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খায়রুল আলম রফিককে । খায়রুল আলম রফিক দেশের প্রভাবশালী সাংবাদিক সংগঠন বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ ইউনিয়ন (বসকো) কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ।
জানা যায়, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি , অনিয়ম, অর্থ আত্বসাতসহ নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশ করা হয় । গত ২৮ মার্চ ২০১৮ সালে দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিনে ‘ শুধু খাদ্যের খাতে দুর্নীতির পরিমান কোটি টাকা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে , হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঐ সংবাদটির শতভাগ সততা থাকায় প্রতিবাদ করার মত কোন কারন এবং উপায় না দেখে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার হাসেম আলীকে দিয়ে পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খায়রুল আলম রফিকের নামে একটি হাস্যকর অভিযোগ এনে মামলা করে ।
মামলার অভিযোগে সম্পাদকের পরিচয় গোপন রেখে বলা হয়, খায়রুল আলম রফিক একজন সন্ত্রাসী , চাঁদাবাজ ইত্যাদি । গত ২ এপ্রিল ২০১৮ সালে হাসেম আলী বাদী হয়ে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকসহ অজ্ঞাত ৫ থেকে ৮ জনের নামে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতর কুক হাউজ অফিস, ২০ ইঞ্চি টিভি, কাঠের চেয়ার ভাংচুর করে ১ লাখ টাকার ক্ষতি সাধনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন ।
এসময় খায়রুল আলম রফিক চাইনিজ কুড়াল, রামদাসহ অস্ত্র নিয়ে এঘটনা ঘটনায় বলে ঐমামলায় উল্লেখ করা হয়েছে । ময়মনসিংহের জেলা বিজ্ঞ সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে এ মামলাটি করা হলে আদালতের হাকিম মামলাটি আমলে নিয়ে যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দেন পিবিআইকে ।
পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আবু বকর সিদ্দিক মামলাটি তদন্তের জন্য উপ পরিদর্শক (এসআই) মো: আবু সালেককে দায়িত্ব দেন । আবু সালেক মামলাটি তদন্ত না করেই, প্রভাবিত হয়ে বাদির যোগসাজশে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন মর্মে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন ।
এদিকে এই মামলার অভিযোগ, পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন সাধারণ মানুষকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে । ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে । সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক অভিযোগে আনিত সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটালে অবশ্যই সিসি ক্যামেরায় বন্দি হয়ে থাকার কথা ।
একজন ব্যক্তি কি করে এতসব অস্ত্র নিয়ে এসব করলো ? ঘটনাস্থলে হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন কি করছিলেন ? রান্না ঘরেই পাশেই পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থান করছিলেন ১৫ জন সশস্ত্র পুলিশ, ৫০ জন সশস্ত্র আনসার , ৫৬ জন সিকিউরিটি গার্ড কি করছিলেন তখন ?
এসবই প্রশ্নের জন্ম দেয় । প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মামলা না করে এই মামলা ঠিকাদার কর্তৃক করার প্রেক্ষিতেও । এদিকে খায়রুল আলম রফিকের নামে এই ভূয়া, বানোয়াট ও হয়রানিমূল অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের এবং মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামার ঘোষনা দিয়েছি বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ।
জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ময়মনসিংহ সদর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনোনেশ দাস জানান, সাংবাদিকদের হেনস্থা করতে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা করে সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাঁধা দেয়া খুবই দু:খজনক বিষয়।
সরকারের উচিত এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধেই উল্টো ব্যবস্থা নেয়া উচিত । বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আল মামুন জানান, সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক একজন বস্তুনিষ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ।
তাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করে সংবাদপত্রের কণ্ঠ রোধে মড়িয়া হয়ে উঠেছে হাসপাতালের ঠিকাদার হাসেম আলী । আমাদের সংগঠনের মহাসচিবের নামে মামলা প্রত্যাহার এবং হাসেম আলীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হলে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষনা