কোরবানির গরু আসলেও জমেনি বেচাকেনা

কোরবানির গরু আসলেও জমেনি বেচাকেনা
রাজধানীর পশুর হাটে এখনও কোরবানির গরু আসছে, কিন্তু সেই তুলনায় জমেনি বিক্রি। যদিও গতকাল শনিবার ঢাকার পশুর হাটগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে, সেই তুলনায় বিক্রি বাড়েনি। তবে অনেকে আবার ঝামেলা এড়াতে আগেভাগেই বেশি দামে ক্রয় করছেন গরু, আবার অনেকে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। কেউ বা দরদামও করেছেন কিন্তু কেনা হয়নি কোরবানির পশুটি। তবে আজ রবিবার থেকে মূল বেচা-বিক্রি শুরু হবে, এমনটাই আশা করছেন বেপারী ও ইজারাদাররা।
রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, এবারের কোরবানির হাটে দেশিয় গরুর আধিক্যই বেশি। ক্রেতাদের কাছে দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে। মাঝারি আকারের গরুর চাহিদাই বেশি বলে বলছেন বেপারীরা। হাটে প্রচুর গরু থাকলেও ছাগল, মহিষ, ভেড়া ও উট কম। শুধু গাবতলী পশুর হাটে একটি উট ও দুটি দুম্বা তোলা হয়েছে।
ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম অনেক বেশি। এক লাখের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে দেড় লাখ টাকা। তবে বেপারীরা বলছেন, খরচ বেশি। খাদ্য, ওষুধ, পরিবহন ও রাস্তার খরচ মিলে পশুর দাম বেশি পড়েছে।
এদিকে দুই সিটি কর্পোরেশনের ইজারার শর্তে ১৯ আগস্টের আগে হাটে পশু বেচাকেনা করা যাবে না উল্লেখ থাকলেও এ শর্ত না মেনে আগে থেকেই হাট শুরু করেছেন ইজারাদাররা। তবে আগে হাট শুরু করলেও বেচা-বিক্রি জমেনি। সিটি করপোরেশনের ঘোষণা অনুযায়ী, আজ রবিবার থেকেই কোরবানির পশুর মূল বেচা-বিক্রি শুরু হবে।
অপরদিকে এক হাটের পশু অন্য হাটে জোর করে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। যদিও সরকারি নির্দেশনায় বলা আছে, এক হাটের পশু অন্য হাটে নেওয়া যাবে না। প্রতি বছরের মতো এবারও পশুবাহী ট্রাকে হাটের নাম লেখা থাকবে বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কিন্তু সেই নির্দেশনা না মেনে এক হাটের গরু অন্য হাটে জোর করে নিয়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালীরা। বেপারীরা জানিয়েছেন, ঢাকায় গরু নিয়ে আসতে পথিমধ্যে অনেক বাঁধা পেরুতে হয়েছে। অনেক হাটে জোর করে পশু নামিয়ে দেয়া হচ্ছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর হাজারীবাগ হাট, বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম এলাকা সংলগ্ন হাট, তেজগাঁও সাব রেজিস্ট্রার অফিস সংলগ্ন, শনির আখড়া ও মোহাম্মদপুর বসিলা পশুর হাটসহ কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা যায়, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর ও উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকে গরু নিয়ে এসেছেন বেপারীরা।
হাজারীবাগ পশুর হাটে কোরবানির গরু কিনতে এসেছেন আমিনুল ইসলাম খান। তিনি জানান, অনেকক্ষণ ঘুরেছি কিন্তু গরু কিনতে পারিনি। কারণ বেপারীরা গরুর দাম অনেক বেশি চাচ্ছে। এদিকে গাবতলী পশুর হাটে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনেছেন আসলাম হোসাইন। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এবার গরুর দাম বেশি। এরপরও ঝামেলা মুক্ত থাকতে আগেই কিনলাম।
বসিলা পুলিশ লাইন হাটে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে গরু এনেছেন মো. আবদুর রহিম। তিনি বলেন, তিনদিন হলো হাটে এসেছি। একটি গরু আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। এখনো চারটি গরু আছে। গরু পালতে যা কিছু দরকার তার সব কিছুরই দাম বেশি। তাহলে আমরা কম দামে কিভাবে গরু বিক্রি করব ?
বসিলা পুলিশ লাইন হাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসরাফিল হোসেন বলেন, বেপারী, খামারি ও কৃষক যারাই এ হাটে গরু আনবে, তাদের জন্য সব সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে। নিরাপত্তার জন্য সব সময় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ বক্সে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন আছে।
গাবতলী পশুর হাটে আমজাদ বেপারী উট এবং দুম্বা দুটি কিনে এনেছেন ভারতের রাজস্থান থেকে। প্রতি বছরই আনেন উট ও দুম্বা। আমজাদ ব্যাপারীর ছেলে জাফর বলেন, উটের দাম ১৮ লাখ টাকা আর দুম্বা জোড়ার দাম চেয়েছি ৭ লাখ টাকা।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment