সিংগাইর উপজেলার জীবন্ত রাজনৈতিক কিংবদন্তী হাজী আব্দুল মাজেদ খান

 মোহাম্মদ আব্দুস সালাম রুবেলঃ

হাজী আব্দুল মাজেদ খান- সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলার বলধরা ইউনিয়নের ছয়বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। সিঙ্গাইর উপজেলার বলধরা ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামে জন্ম নেয়া এই জীবন্ত রাজনৈতিক কিংবদন্তির সাথে আলাপ হলে তার জীবনের নানান অজানা কথা সহ বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও সামনে চলে আসে। একজন আপাদমস্তক ভালো মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আব্দুল মাজেদ খান। তা না হলে এই মানুষটি তার এলাকায় গত ছয় বার চেয়ারম্যান হিসেবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে বর্তমানেও চেয়ারম্যান পদে আসীন থাকতে পারতেন না। পাশাপাশি তিনি ১৯৭৩ সাল থেকে সিংগাইর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছেন। জনগণ তাকে ভালবাসে কারন হলো, রাত নেই দিন নেই তিনি যে কোনো সময় জনগণের যে কোন প্রয়োজনে যে কোনো ডাকে সব সময় হাজির থাকেন। মোটকথা জনগণের কল্যাণে নির্বাচিত হয়ে তিনি জনগণের সমস্ত সুখ দুঃখ এসব গুলি তিনি সবসময় দেখে আসছেন। এ জন্যই তিনি টানা ছয় বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পেরেছেন বলে তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে জানালেন। দুর্দিনে মানুষের পাশে যদি থাকা যায়, তাহলে মানুষও যে তার পাশে তার দূর্দিনে থাকবে এটা আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে উপলব্ধি করেছি- একথাও জানালেন তিনি। আগামীতে সিংগাইর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিযোগিতা করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তার কাছে জিজ্ঞাসা করা হয় যে আপনি এই বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট টা আপনি কিভাবে দেখছেন?উত্তরে তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে দুইটি ধারার রাজনীতি চলছে, একটা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আর একটা স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। ৫৪ হাজার বর্গমাইলের এই দেশ বাংলাদেশ। সাড়ে ১৬ কোটি লোকের বসবাস এখানে। কিন্তু এই প্রায় ১৬ কোটি মানুষের ভিতর শিক্ষার গুণগত মানের হার খুবই কম। এবং শুধু এই কারণেই এই প্রেক্ষাপটে মানুষকে বোঝানোটা খুবই কষ্টসাধ্য। আরেকটা জিনিস হলো যারা আওয়ামী লীগ করে তারা তো আছেই, আর যারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যেমন বিএনপি- জামাত-শিবির সহ অন্যান্য বিভিন্ন যে সকল শক্তি, তারা সবসময় এই আওয়ামী লীগের বিপক্ষে কাজ করতে গিয়ে মূলত দেশের ক্ষতি সাধনই করেছে। আর তাদের মূল অস্ত্র যা দিয়ে জনগণকে বুঝানো হয়েছে, সেটা হলো ইসলাম ধর্মকে সামনে নিয়ে এসে তারা ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে এবং এখনো করছে। আমাদের দেশে যেহেতু ইসলামের অনুসারী বেশি তাই তারা ধর্মভীরু। মোটামুটি এই না বোঝার কারণেই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি তারা তাদের এই অপপ্রচার করতে সক্ষম হচ্ছে। কিন্তু এরপরও আমরা আমাদের সিংগাইর উপজেলায় লক্ষ্য করছি যে. আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম আমাদের সবাইকে সাথে নিয়ে তৃনমূল পর্যায়ে মানুষের ভিতরে কাজ করে এই ধর্মের অপব্যবহার রোধ করতে সক্ষম হয়েছেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, যে সংসদ সদস্য তৃণমূলের সাথে সম্পৃক্ত থেকে জনগনের জন্য কাজ করবে, এবার তারাই মনোনয়ন পাবেন। এ ব্যাপারে আপনার চিন্তাভাবনা জানতে চাইছি? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আমাদের মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম যেভাবে গত ৫ বছরে দ্বারে দ্বারে যেয়ে যেয়ে কাজ করেছেন, তাতে আমাদের সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে নিন্দুকেরাও এই বিষয়টিতে কোনো অভিযোগ তুলতে পারবেনা। আমাদের দেশে বর্তমানে যে ৩৫০ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন, আমার মনে হয় আমাদের মমতাজ বেগম এর মত এত ব্যাপকভাবে তৃণমূল পর্যায়ে কেউই গণসংযোগ করতে পারে নাই। তিনি আমাদের মানিকগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামীলীগের সহযোগী এবং সকল অংগসংগঠনকে এতটাই মজবুত ও শক্তিশালী করেছেন যা প্রশংসার দাবীদার। আমরা শুনতে পেয়েছি যে, আপনাদের আওয়ামীলীগের ভিতরে গ্রুপিং সৃষ্টি হয়েছে, এই বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন? উত্তরে জানান, আমাদের মধ্যে কোনো গ্রুপিং নাই, আমরা আওয়ামীলীগ এবং এটাই আমাদের বড় পরিচয়। আর আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এই আসনে তার মনোনয়ন দেয়া প্রার্থী তথা নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত সিংগাইর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। বেশীরভাগ সময়েই এই দেশে যেহেতু আওয়ামীলীগ বিরোধী শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকেছে, তারা নানা ভাবে নানান কৌশলে মানুষকে নির্যাতন ও লুটপাট করেছে। তাদের আমলে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিএনপি আমলে শিল্পমন্ত্রী ও ছিলো এই এলাকার, জাতীয় পার্টির সময় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীও ছিলো একজন- তারপরও এই আসনে তেমন কোনো উন্নয়নের হাওয়া লাগে নাই। এ প্রসংগে তিনি জানান, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর মমতাজ বেগম এই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পরে, প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন এবং আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সহ যে অভাবনীয় উন্নয়নের চিত্র সামনে রয়েছে, তাতে তার সময়ের উন্নয়ন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মমতাজ বেগমকে মনোনয়ন দেয়াটা যে বিচক্ষণতার পরিচায়ক একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসংগক্রমে তিনি আরও উল্লেখ করেন, মমতাজ বেগম সম্পূর্ণ নিজ খরচে সিংগাইরে ‘মমতাজ চক্ষু হাসপাতাল’ নামে একটি চক্ষু হাসপাতাল জনগনের জন্য তৈরী করেছেন। এছাড়াও কৃষকদের সুবিধার জন্য তিনি একটি ‘কোল্ড স্টোরেজ’ তৈরী করে দিয়েছেন। আমাদের বর্তমান সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম একজন শিল্পীমনা মানুষ, তিনি অত্যন্ত বিনয়ী এবং অত্যন্ত কোমল হৃদয়ী মানুষ এবং আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত স্নেহের। আমরা আশা করছি সামনের জাতীয় নির্বাচনেও মমতাজ বেগমকেই তিনি এই আসন থেকে মনোনয়ন দেবেন। আমরা শুনেছি আপনি অনেক গুণসমৃদ্ধ একজন মানুষ, এ ব্যাপারে আমাদেরকে কিছু বলুন? এর উত্তরে তিনি বলেন, মানুষের জীবনে এমন কিছু নাই যা আমি পারি না। হাল চাষ করা, জাল দিয়ে মাছ ধরা, গান গাওয়া এবং নাট্যমঞ্চে অভিনয় সহ খেলাধুলায়ও আমি পারদর্শী ছিলাম। আমি সিংগাইর উপজেলার আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, আমাকে দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, আমি তা সঠিকভাবে পালন করার চেষ্টা অব্যহত রাখবো। এবং আমি দেশবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারকে জনগনের উন্নয়নে কাজ করার জন্য বিজয়ী করতে আহবান জানাই।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment