১৪ লাখ টাকার মাছ ছেড়ে দিল বনবিভাগ !

 আবু হানিফ, বাগেরহাট অফিস ঃ

বঙ্গোপসাগর থেকে সামুদ্রিক মাছ নিয়ে ফিরে আসার সময় অস্ত্রের ভয় দিয়ে একটি ফিশিং ভ্যাসেল (মাছ ধরার জাহাজ) আটক করে বনবিভাগ।পরে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ১৪ লাখ টাকার মাছসহ “এফ ভি মেটাডোর” নামে দুই কোটি টাকার সেই জাহাজ ছেড়ে দেয়া হয়। তবে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ষ্টেশন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম দাবি করেন, বনবিভাগ অনুমদিত জরিমানা নিয়ে সবকিছু ছেড়ে দেয়া হয়েছে।বৃহস্পতিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সুন্দরবনের পশুর নদীতে জয়মনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।চাঁদপাই রেঞ্জের ষ্টেশনের সহকারি বনসংরক্ষক (এসিএফ) শাহিন কবির জানান,বঙ্গোপসাগর থেকে ফিরে আসার সময় বৃহস্পতিবার ভোরে পশুর নদীর জয়মনিতে অভিযান চালিয়ে বনরক্ষীরা একটি ফিশিং ভ্যাসেল (মাছ ধরার জাহাজ) আটক করে।ওই বোটে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ছিল।তিনি বলেন,সাগরে মাছ ধরার অনুমতি থাকলেও রিজার্ভ ফরেষ্ট (সুন্দরবন) এর ভিতরে চলচলের জন্য বনবিভাগের অনুমতি ছিলনা।এ কারনেই ওই ফিশিং ভ্যাসেল আটক করা হয়েছে।পরে কাগজপত্র (সার্ভে কাগজ,মেরিন ফিশারিজের অনুমতি পত্র) যাচাইয়ের পর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে ১৫ জন নাবিকসহ ছেড়ে দেয়া হয়।চাঁদপাই রেঞ্জের ষ্টেশন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন,“জরিমানা দেড় লাখ টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত থাকলেও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদ্ববিরে মাত্র ৫০ হাজার টাকায় ছেড়ে দিতে হয়েছে।এটা নিয়ে আপনারা আবার লেখালেখি করেন না”।এদিকে এফ ভি মেটাডোর ফিশিং ভ্যাসেল (মাছ ধরা জাহাজ) এর মাষ্টার মোঃ এনায়েত হোসেন খান বলেন,আমরা প্রায় ২০ বছর ধরে সমুদ্র থেকে মাছ ধরে সুন্দরবনের পাশ দিয়ে পশুর নদী হয়ে খুলনায় চলাচল করছি।কিন্তু কখনো বনবিভাগের অনুমতি প্রয়োজন হয়নি।তিনি আরো বলেন, “আমাদের সমুদ্র মাছ ধরার জন্য মেরিন ফিশারিজের অনুমতি এবং মাছ ধরার জাহাজের সার্ভে (সমুদ্রে চলাচলের রুট পারমিশন) আনুসাঙ্গিক সব কাগজ রয়েছে।হঠাৎ আজ সকালে অস্ত্রের ভয় দিয়ে জাহাজসহ আমাদের পাঁচ ঘন্টা আটকে রাখা হয়েছে।পরে জোর করে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।ওই জাহাজে সাত হাজার কেজির বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ছিল বলে জানান তিনি”।অস্ত্র দেখিয়ে আটকের বিষয়টি স্বীকার করেন চাঁদপাই রেঞ্জের ষ্টেশন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।তিনি বলেন,প্রাথমিকভাবে তাদের (মাছ ধরার জাহাজে থাকা নাবিকদের)সিগনাল দিয়ে গতিরোধের চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে অস্ত্র তাক করেছিলাম।সুন্দরবন সহ ব্যবস্থাপনা সংগঠনের (সিএমসি) সহ সভাপতি শুকুরুজ্জামান হাওলাদার জানান,বনবিভাগের কর্মকর্তাদের কথা বলে আর লাভ কি? এখানে (চাঁদপাই ষ্টেশন) কিছু অসাধু কর্মকর্তা রয়েছেন যারা দূর্ণীতি ছাড়া কিছুই বোঝেন না।তিনি বলেন, আজকের ঘটনাই দেখেন কিভাবে মানুষকে হয়রানি করে তারা টাকা আদায় করেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment