মামলা নিয়ে যা বললেন ন্যান্সি

‘আমি তো আমার ভাইয়ের সংসারে থাকি না। আমি থাকি আমার সংসারে। তিনি আমার ভাইয়ের স্ত্রী ছিলেন। তাদের ডিভোর্স হয়েছে। ডিভোর্সের আগে আমার ভাই তার স্ত্রীর সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন, সেটা আমি কীভাবে জানবো? কিন্তু তিনি আমাকে জড়িয়ে মামলা দিয়েছেন। কেন মামলায় আমাকে জড়ালেন সেটা সবারই জানা? মামলায় আমাকে জড়ালে আলোচিত হবে এটাই হয়তো তারা চাইছেন।’

কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সির  ছোট ভাই শাহরিয়ার আমান সানির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছে তার স্ত্রী সামিউন্নাহার শানু । মামলায় আসামী করা হয়েছে ন্যান্সিকেও। মামলার বিষয়েই জানতে চাইলেই কথাগুলো বলেন জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পী।

ন্যান্সি এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। বিষয়টি নিয়ে আইনিভাবেই এগোবেন বলে জানান তিনি।  ন্যান্সি বলেন, ‘গত ২৭ আগস্ট সানি তার স্ত্রী সামিউন্নাহার শানুকে তালাক দিয়েছেন। এই তালাকের কাগজ এরই মধ্যে শানুর হাতে পৌঁছেছে। ডিভোর্সের এতোদিন পর তিনি এ মামলা কেন করছেন জানিনা। আর  স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ব্যাপারে আমি বা আমার স্বামীর সঙ্গে সানি কোনো আলোচনা বা পরামর্শও করেনি।’

ন্যান্সি সমকাল অনলাইনকে আরও বলেন, ‘সবাই বোঝতে পারছেন কেমন মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। যেহেতু আমাকে দেশের সবাই চেনেন, জানেন, আমরা একটি পরিচিতি আছে, তাই আমাকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমাকে জড়ানোর ফলে তারা এখন দেশের সব সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব পাচ্ছে। যেহেতু সব সংবাদমাধ্যমে খবর হচ্ছে, ফলে প্রশাসনও ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। আর আরেকটি ব্যাপার বেশ বুঝতে পারছি, আমাকে দেশের সবার সামনে ছোট করার জন্য, আমার ইমেজের ক্ষতি করার জন্য তারা আমাকে এই মামলায় আসামি করেছে।’

বৃহস্পতিবার রাতে সানির স্ত্রী সামিউন্নাহার শানু নেত্রকোনা মডেল থানায় এই মামলা দায়ের করেন।  পরে শুক্রবার  সন্ধ্যায় শহরের  সাতপাই পূর্বধলা রোডের  ন্যান্সি’র বাসা থেকে সানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন খান জানান, সানির বিরুদ্ধে তার স্ত্রী শানু বাদী হয়ে যৌতুকের জন্য  হত্যার চেষ্টার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় ন্যান্সি ও তার স্বামী নাদিমুজ্জামান যায়েদের বিরুদ্ধে নির্যাতনে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। পরে  শুক্রবার সন্ধ্যায় সানিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলার বাদী সামিউন্নাহার শানু জানান, ২০১৫ সালে নেত্রকোনা সরকারি কলেজে পড়ার সময় সানির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়। তবে বিয়ের পরই সানি বেকারত্বের কারণ দেখিয়ে বোন ন্যান্সি ও বোন জামাই যায়েদের উস্কানিতে বিভিন্ন সময় শানুর পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র যৌতুক হিসেবে এনে দিতে বাধ্য করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬  আগস্ট রাতে তার কাছে আরও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন সানি। এতে অপারগতা প্রকাশ করলে সানি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে লাথি মেরে মেঝেতে ফেলে দেন। পরে মারধরের এক পর্যায়ে শানুকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা চালান। এ সময় শানুর চিৎকার শুনে পাশের ঘরে থাকা সানির বন্ধুরা এসে তাকে রক্ষা করেন।

শানু আরও জানান, বিষয়টি তিনি  তার পরিবারের সদস্যদের জানালে তারা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় সানি তাকে তালাক দেওয়ারও হুমকি দেন। পরে যৌতুকের দাবি ও স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে তিনি মামলাটি দায়ের করেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment