এনআরসি করতে এবার পশ্চিমবঙ্গে তৎপর বিজেপি

ভারতের বিতর্কিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) পশ্চিমবঙ্গেও করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি। এনআরসি বাস্তবায়নের দাবি জোরালো করতে ছোট ছোট বৈঠক, সেমিনার ও শোভাযাত্রা করছে দলটির নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে বাংলাদেশসংলগ্ন জেলাগুলোতে বিজেপির তৎপরতা বেড়েছে। ভারত থেকে কথিত বাংলাদেশিদের বিতাড়নের সপক্ষে বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গলাবাজির মধ্যে এ খবর এলো।

পশ্চিমবঙ্গের ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়, বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সদর দপ্তর ২১ দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে বিজেপির শরণার্থী সেল, যেটি প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া অমুসলিম নাগরিকদের নিয়ে কাজ করে থাকে।

বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্ত বসু বলেন, ‘আমরা পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি বাস্তবায়নের জন্য রাজ্যের ৩৭টি সাংগঠনিক জেলায় ২০ হাজার লোক নিয়োগ করেছি। ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে এ কর্মসূচি শেষ হবে ৭ অক্টোবর।’

তবে এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তার রাজ্যে কোনোভাবেই এনআরসি চালু করতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি কে চালু করবে? কেন্দ্রের মনে রাখা উচিত, এখানে আমরা বাঘের বাচ্চারা বসে আছি। এনআরসি চালু করা অত সহজ নয়।’

গত ৩০ জুলাই ভারতের আসামে এনআরসি তালিকা প্রকাশিত হয়। আসামে বসবাসকারী তিন কোটি ২৯ লাখ মানুষ আবেদন করেছিলেন এনআরসি তালিকায় নিজেদের নাম তুলতে। ওই তালিকায় ঠাঁই হয় দুই কোটি ৮৯ লাখ মানুষের। অর্থাৎ, আসামে বসবাসকারী ৪০ থেকে ৪১ লাখ মানুষ ‘ভারতীয়’ হিসেবে ওই তালিকায় নাম তুলতে পারেননি।

বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখার সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘আমরা বরাবর বলে আসছি, এই রাজ্যে এক কোটি অনুপ্রবেশকারী আছেন। বাংলাদেশ থেকে তারা এই রাজ্যে ঢুকে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বাস করছেন। এই রাজ্যে এনআরসি তৈরি হলে চিহ্নিত করা যাবে কত অনুপ্রবেশকারী এখানে রয়েছে।’

বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি অমিত শাহ ও সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বলেছেন, অবৈধ বাংলাদেশিদের ভারত থেকে বিতাড়ন করা হবে।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আসামে এনআরসি নিয়ে বিতর্ক কেটে গেলে বিহার, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ড ও মহারাষ্ট্রে এ প্রক্রিয়ায় নাগরিক তালিকা তৈরির কাজ শুরু হতে পারে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment