জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায়

জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায়

র‌্যাবিসকে বাংলায় জলাতঙ্ক বলা হয়। অর্থাৎ জলে যার আতঙ্ক। এই রোগ হলে পানি দেখে আতঙ্ক হয় বলে মনে করা হয়। তবে এসব রোগী পানি দেখে তখনই ভয় পায়, যখন এটি ভাইরাস সংক্রমিত হয়। ফলে জলাতঙ্ক রোগী যখন পানি খেতে যায়, তখন তার গলা ও শ্বাসনালি উত্তেজনায় সংকুচিত হয়ে তীব্র ব্যথার অনুভূতি জাগায়। সেই সঙ্গে কিছু পানি শ্বাসনালি দিয়ে মূল শ্বাসতন্ত্রে প্রবেশ করে অনবরত কাশি হয়। ফলে পানি দেখলেই এসব রোগী ভয় পায়। তাই এ রোগের নাম জলাতঙ্ক।

এ ভাইরাস ক্ষতস্থান থেকে খুব সহজে মগজের নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে রোগীর মধ্যে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায়। যেমন, অসংলগ্ন আচরণ, আবোল-তাবোল কথাবার্তা, দৈনন্দিন কাজ করতে না পারা, অতিরিক্ত উত্তেজনা, শ্বাসকষ্ট এমনকি শ্বসনতন্ত্র অকেজো হয়ে যেতে পারে।

জলাতঙ্ক রোগের বিশেষত্ব হচ্ছে, পশু কামড়ানোর পরেও এ রোগের টিকা দেওয়া যায়। অন্য যে কোনো রোগের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য নয়। কিন্তু রেবিস ভাইরাসের সুপ্তিকাল দীর্ঘ বলে পরেও টিকা দেওয়া যায়।

আগে বলা হতো, কোনো কুকুর কামড়ালে সেই কুকুরকে ১০ দিন পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং ১০ দিনের মধ্যে কুকুরটি মারা না গেলে টিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এখন এটি সত্য নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। এখন বলা হয়, জিরো আওয়ার অর্থাৎ কুকুর কামড়ানোর পর যত শিগগির সম্ভব টিকা দিতে হবে এবং চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

আগে নাভিতে ১৪টি ইনজেকশন দিতে হতো। এখন চারটি দিলেই হয়। কুকুর কামড়ানো ছাড়াও আগে থেকেই সতর্কতা হিসেবে ইনজেকশন দেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে তিনটি ইনজেকশন দিলেই হলো।

অবশ্য জলাতঙ্ক রোগের চিকিৎসার চেয়ে এ রোগ প্রতিরোধের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। এ রোগ প্রতিরোধে যেসব প্রাণীর আঁচড় বা কামড়ে জলাতঙ্ক হয় তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। জলাতঙ্ক রোগ যে শুধু কুকুর কামড়ালে হয়, তা নয়। বিড়াল, বাদুড়, শেয়াল, বেজি ইত্যাদির কামড়েও হয়। আবার এদের আঁচড় থেকেও হতে পারে। পোষা কুকুর-বিড়ালকে আগে থেকেই জলাতঙ্কের টিকা দিলে নিরাপদ থাকা যায়।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment