কলাপাড়ায় ৯ দিনেও উদঘাটন হয়নি স্কুল ছাত্রী মরিয়ম অন্তর্ধান রহস্য।।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি।।
নবম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী মরিয়ম (১৪) খুন হয়েছে নাকি পালিয়েছে এ প্রশ্নের উত্তর গত নয়  দিনেও মেলেনি। এ কারনে ঘরে ঘুমিয়ে থাকা মরিয়মের হঠাৎ করে উধাও ও রক্তের দাগ নিয়ে গোটা এলাকা জুড়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশী ও মরিয়মের সহপাঠীদের মধ্যে এ ঘটনায় চাপা আতংক বিরাজ করছে।
পুলিশ জানিয়েছে  বিভিন্ন সূত্র ধরে এ মামলাটি তারা তদন্ত করছে। তদন্তের স্বার্থে বিষয়টি গোপন রাখা হচ্ছে। মরিয়মের ঘর থেকে সংগ্রহ করা রক্ত, মাংস খন্ড ও রক্ত মাখা ছুরির ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পরই এ রহস্য বের হয়ে আসবে।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর (বুধবার) ভোরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মহিপুরে খানাবাদ কলেজ সংলগ্ন নিজ বসত ঘর থেকে উধাও হয় মহিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম। মরিয়মের ঘরে রক্তের ছাপ, তার পয়ের নুপুর, রক্তমাখা ছুরি ও দুই টুকরা মাংস খন্ড পড়ে থাকতে দেখে প্রথমে পুলিশ ও এলাকাবাসী ধারনা করে মরিয়মমে হত্যা করে লাশ টুকরো করে ফেলা হয়েছে। লাশের টুকরো সরানোর সময়ে হয়তো দুই খন্ড মাংস ঘরে পড়েছিলো। ঘর ভর্তি মানুষের উপস্থিতিতে কিভাবে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে কোন ধরনের বাঁধা ছাড়া হত্যা শেষে শরীর টুকরো করা সম্ভব হয়েছে এ প্রশ্ন ঘটনার পরই পুশিল ও স্থানীয়দের মধ্যে উঠলেও মরিয়ম নিখোঁজ রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) রাতের খাবার খেয়ে মৃত বাবুল মল্লিকের স্ত্রী নুরজাহান, তার শিশুপুত্র হামিম (৩) ও মেয়ে মরিয়ম ঘরের নিচে এক খাটে ঘুমাতে যায়। ঘরের দোতলায় মরিয়মের বোন রেশমা ও ভগ্নিপতি মাঈনুল ইসলাম ঘুমিয়ে ছিল। রাত তিনটার দিকে রেশমা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বাইরে নেমে আবার ঘরে ওঠে। এ সময়ও বোন মরিয়মের সাথে কথা বলে ঘুমাতে যায় রেশমা। ভোর রাতে মরিয়মের মায়ের চিৎকার শুনে ঘুম ভাগে রেশমাসহ প্রতিবেশীদের। মরিয়মকে ঘুমে দেখতে না পেয়ে ও ঘরে রক্তের দাগ দেখে সে আতংকে চিৎকার করে। ঘরের মেঝে রক্ত, পায়ের নূপুর, দুই টুকরো মাংস, রক্তমাখা দুটি ছুরি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পেলেও মরিয়মকে খুঁজে না পাওয়া যাওয়ার গোটা এলাকা জুৃড়ে আতংক সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ, সিআইডি, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে আলামত সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেন। ঘটনার পরদিন ২০ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) মরিয়মের মা নুরজাহান বেগম বৃহস্পতিবার দুপুরে বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মহিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
মরিয়মের একাধিক সহপাঠী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্কুলে মরিয়মের সাথে প্রতিবেশী বা স্কুলের কোন ছেলের সম্পর্ক আছে এমন কোন খবর তাদের কাছে নেই। এমনকি মরিয়ম মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতো না। কিন্তু কি কারনে মরিয়মের ঘরে রক্ত মাখা পায়ের নুপুর, মাথার চুল পড়েছিলো বিষয়টি খুবই রহস্যজনক।
 মরিয়মের সহপাঠী ও প্রতিবেশীদের দাবি, পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে এ মামলাটি তদন্ত করলে খুব শীঘ্রই মরিয়ম খুন,গুম নাকি পালিয়েছে এ বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে। তবে ঘরের মধ্যে এতো রক্ত, মাংসের টুকরো, রক্তে ভেজা চুল আসলো কিভাবে সেটিও তাদের ভাবাচ্ছে। এাট কি কোন পরিকল্পনা নাকি বাস্তবতা এ প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। তবে সর্বা দাবি অতি শীঘ্রই এ মরিয়ম হত্যা রহস্য উদঘাটন করা হোক।
মহিপুর থানার ওসি(তদন্ত) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে মরিয়ম নিখোঁজ বা হত্যা রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে। প্রশাসনের বিভিন্ন বাহিনীও বিষযটি তদন্ত করছে। পুলিশ কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করছে যা তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখা হচ্ছে। তবে ফরেনসিক রিপোর্ট পেলে পুরো বিষয়টি জানা যাবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment