‘মিটু’র পর এবার নয়া আন্দোলন

'মিটু'র পর এবার নয়া আন্দোলন

নারীদের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে শুরু হওয়া ‘মিটু’ আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে।

ভারতে এক মন্ত্রীর পদত্যাগ ছাড়াও আরও নানা ঘটনা ঘটেছে এ আন্দোলনের জেরে। বাংলাদেশেও এ আন্দোলনে সামিল হয়েছেন অনেকে। মুখ খুলেছেন নারীরা।

‘মিটু’ আন্দোলনের পর এবার নতুন এক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে বিভিন্ন দেশে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে অংশ নিচ্ছেন অনেকে।

আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, #দিসইসনটকনসেন্ট। এই হ্যাশট্যাগের সঙ্গে অন্তর্বাসের ছবি। সারা পৃথিবী জুড়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই লেখাই পোস্ট করছেন নারীরা। #মিটু আন্দোলনের পর যা নিয়ে তোলপাড় চলছে এখন। নারীদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদেই এই আন্দোলন।

কিন্তু, কীভাবে শুরু হল এই আন্দোলন? কার পাশে দাঁড়াতে গিয়ে লড়াইয়ের অস্ত্র হিসেবে অন্তর্বাসকেই বেছে নিলেন নারীরা? তার জন্য নজর রাখতে হবে গত কয়েক দিনে আয়ারল্যান্ডে চলতে থাকা ঘটনাগুলোর দিকে।

গত ৬ নভেম্বর ধর্ষণে অভিযুক্ত ২৭ বছর বয়সী এক যুবককে নিরপরাধ বলে মুক্তি দেয় আয়ারল্যান্ডের এক আদালত। তার বিরুদ্ধে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের মারাত্মক অভিযোগ ছিল।

শুনানি চলাকালীন, অভিযুক্তের আইনজীবী ওই কিশোরীর অন্তর্বাস বিচারকদের দেখিয়ে বলেন, ‘এই অন্তর্বাস পরে আমার মক্কেলকে প্রলুব্ধ করেছিলেন ওই নারী। এটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, আকৃষ্ট করার যথেষ্ট সম্ভাবনা এই অন্তর্বাসের আছে। এই ধরনের অন্তর্বাস কেউ পরলে বাকিদের কাছে এই বার্তাই পৌঁছায় যে, তার মিলনের ইচ্ছা রয়েছে। আপনারা এটা দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, ওই মহিলা এত ছোট অন্তর্বাস কেন পরতেন?।’

এই বক্তব্য শোনার পর আটজন পুরুষ এবং চারজন নারী সদস্যের জুরি বোর্ড ধর্ষণের অভিযোগ থেকে রেহাই দেয় ওই যুবককে।

এই ঘটনার পরই শুরু হয় ‘#দিস ইস নট কনসেন্ট’ আন্দোলন। ছোট অন্তর্বাস পরা মানেই যে মিলনে সম্মতি দেওয়া নয়, এই আন্দোলনের মূল কথা এটিই। প্রথমে আয়ারল্যান্ড, তার পর সেই আন্দোলন এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা পৃথিবীতেই।

অবশ্য শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নয়, নির্যাতিতা নারীর পাশে দাঁড়িয়েছেন আয়ারল্যান্ডের রাজনীতিকরাও। আয়ারল্যান্ডের পার্লামেন্টেও পৌঁছে গেছে এই আন্দোলনের ঝড়।

অন্তর্বাস দেখিয়ে পার্লামেন্টে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন আইনসভার সদস্য রুথ কপিঙ্গার। তার প্রতিবাদ দেখানোর সময়, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল পার্লামেন্টের টিভি ক্যামেরা। এটা জানার পর কপিঙ্গারের মন্তব্য, ‘আদালতে অভিযুক্তরা অন্তর্বাস দেখিয়ে ছাড় পেয়ে যায়, অথচ পার্লামেন্টে তা দেখানো যায় না।’ এই নিয়ে রাস্তায় নেমেও প্রতিবাদ সংগঠিত করছেন তিনি।

এখন এই প্রতিবাদে শুধু আয়ারল্যান্ড নয়, সামিল হচ্ছেন দুনিয়ার অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেই তারা বেছে নিচ্ছেন প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment