জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অগ্রপশ্চাত ভেবে প্রতিশ্রুতি দেয়া উচিত। তিনি বলেন, এ বছরই রাজস্বের কিছু সমস্যা রয়েছে যা আগামী সরকারের জন্য ঠিক করতে কঠিন হবে। রাজস্ব খাতে সংস্কার প্রয়োজন আছে কিন্তু তিন লাইনে লিখে থেমে গেলে সংস্কার হয় না। মনে রাখতে হবে, এটি একটি দলের সমস্যা নয়, এটি একটি জাতীয় সমস্যা। এমন যেনো না হয়, প্রতিশ্রুতি দিলাম, কিন্তু ওটা পূরণের কোনো সুযোগই থাকলো না। মঙ্গলবার চ্যানেল আই টকশোতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরে সেটি না রাখতে পারলে ভুল-বোঝাবুঝি হয়। বঙ্গবন্ধু চালের সের ৮ আনায় নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তখনকার প্রেক্ষাপটে ঐ প্রতিশ্রুতির যথার্থতা ছিলো, কিন্তু তিনি এমন এক দেশবাসীর সামনে কথাটি বলেছেন, যাদের কাছে মূল্যস্ফীতি বিচার করার সক্ষমতা ছিলো না। পরিস্থিতির কারণে চালের দাম যে ঐ পর্যায়ে থাকে না সেটা জনগণ বুঝতে চায়নি, সবাই বঙ্গবন্ধুকে ভুল বুঝলো।
তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সামগ্রিক বিশৃঙ্খলা দূর করতে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি ব্যাংকিং খাতের যাবতীয় সমস্যা এড্রেস করে কেমনে কী করা যাবে তা স্পষ্ট করা প্রয়োজন। মনে রাখা দরকার, ব্যাংকিং খাত অন্যান্য অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকেও সংক্রমিত করে। একদিকে ব্যাংকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার কথা বললাম, অন্যদিকে ব্যাংকিং আইনে পরিচালকের সংখ্যা আর তাদের কার্যকালের সীমা বাড়িয়ে দিলাম, এমন কনট্রাডিকশন যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।
দুর্নীতি প্রসঙ্গে আব্দুল মাজিদ বলেন, উভয় ইশতেহারেই বলা হয়েছে দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। কিন্তু বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুর্নীতি হয়ে যায়, তারপরে তদন্ত, এরপরে বিচার। এ পদ্ধতি শুদ্ধ নয়, কারণ এতে অর্থ গায়েব থেকে যায়। দুর্নীতির উৎস খুঁজে সেটি বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি এবং বাস্তবায়ন দরকার। তিনি বলেন, সম্পদ বিবরণীর হিসাবের কথা এবার আ. লীগের ইশতেহারে বলা হয়নি। ২০০৮ সালে এটি তাদের ইশতেহারে ছিলো।
আব্দুল মজিদ আরো বলেন, উন্নত সাহিত্য দিয়ে ইশতেহার যেমন বানানো হয়, একইভাবে বাস্তবায়নও গুরুত্বপূর্ণ। গত তিন চারটি নির্বাচনের সব ইশতেহারে শব্দগতভাবেই সবকিছু দেখা গেছে, বাস্তবে দেখা যায়নি। যদিও কোনো ক্ষেত্রে কিছুটা বাস্তবায়ন দেখা গেছে।