সুনামিতে বিধ্বস্ত ইন্দোনেশিয়া, মৃত বেড়ে ১৬৮

সুনামির ভয়াবহ আঘাতে বিপর্যস্ত  ইন্দোনেশিয়া। বিধ্বস্ত দেশটির সুন্দা স্ট্রেট উপকূল অঞ্চল। সময়ের সঙ্গে ক্রমেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়ে ১৬৮ জনে। এছাড়া আহত রয়েছেন ৭৪৫ জন।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার বরাত দিয়ে রবিবার (২৩ ডিসেম্বর)  ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর প্রকাশ করেছে। খবরে আরও বলা হয়, এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।

বিবিসি জানায়, ভয়াবহ এই দুর্যোগে শত শত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এমন ভয়াবহ সুনামির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে অন্তঃসাগরীয় ভূমিধসকে দায়ী করা হচ্ছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা স্থানীয়দের সতর্ক করে জানিয়েছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ভরা পূর্ণিমায় সাগর আরও উত্তাল হলে শক্তিশালী ঢেউ ক্ষতির কারণ হতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র সুতোপো পুরো নুগ্রোহো সুনামির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা, ভেসে যাওয়া সড়ক, গাড়ির ছবি পোস্ট করেছেন টুইটারে।

প্রত্যক্ষদর্শী নরওয়ের আগ্নেয়গিরিবিষয়ক আলোকচিত্রী ওয়েস্টিন লান্ড অ্যান্ডারসন বিবিসিকে বলেন, সুনামির সময় পশ্চিম জাভার আনিয়ার সৈকতে ছিলেন তিনি।

ওয়েস্টিন বলেন, ‘আমি সৈকতে একা ছিলাম। আমার পরিবারের লোকজন হোটেলের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। আমি ক্র্যাকাটোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের দৃশ্য তোলার চেষ্টা করছিলাম। এর আগের দিন সন্ধ্যায় ভারী অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছিল।’

তিনি জানান, ঘটনার সময় বড় ঢেউয়ের আঘাতে অগ্ন্যুৎপাত বন্ধ হয়ে যায়। চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। হঠাৎ তিনি দেখতে পান, বড় ঢেউ তেড়ে আসছে। তিনি দৌঁড়ে পালান। শুধু দুটো ঢেউ আসে। প্রথম ঢেউটি শক্তিশালী না হওয়ায় তিনি পালিয়ে হোটেল কক্ষে চলে আসতে পারেন। শক্তিশালী দ্বিতীয় ঢেউটি হোটেলের ওপর দিয়ে উঠে যায়। রাস্তায় থাকা গাড়িগুলোকে ভাসিয়ে নেয়।

তিনি আরও জানান, হোটেলের সবাই পাশের বনে আশ্রয় নেন। এখনো তারা সেখানে পাহাড়ের ওপরে অবস্থান করছেন।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাটি জানায়, শনিবার (২২ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে সুনামির তাণ্ডব শুরু হয়।

নুগ্রোহো জানান, সুনামির কারণ ক্র্যাকাটোয়া আগ্নেয়গিরি। প্রবল অগ্ন্যুৎপাতের জেরে সুনামি আছড়ে পড়ে জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের মাঝে অবস্থিত সুন্দা স্ট্রেটে। সুনামির তাণ্ডবে একের পর বাড়ি ভেঙে পড়তে শুরু করে।

ইন্দোনেশিয়ান আবহাওয়াবিজ্ঞান, ক্লিম্যাটোলজি এবং জিওফিজিক্যাল এজেন্সি (বিএমকেজি) বলছে, এ সুনামি কোনো ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্টি হয়নি। সম্ভবত লামপাংয়ের মাউন্ট ক্রাকাতোয়া দ্বীপের আগ্নেয়গিরি প্রভাব থেকে এ সুনামির উৎপত্তি।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment