১৬-১৭টি আসন সরকারকে উপহার দিলো সংশ্লিষ্টরা: ২০ দলীয় জোট

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৬-১৭টি আসনে বিএনপির প্রার্থী শূন্য করে সরকারকে উপহার দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ২০ দলীয় জোট। এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগও দাবি করেন তারা।

বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের এক জরুরি বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

নজরুল বলেন, ‘১৬-১৭টি আসন আমাদের প্রার্থীবিহীন করা হলো। এর মাধ্যমে এই আসনগুলো সরকারকে উপহার দিলো সংশ্লিষ্টরা। আজকেও ৩ জনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধার-৪ আসন ও নাটোর-৪ এর প্রার্থী রয়েছে। নরসিংদী-৩ আসনের মনজুর এলাহির প্রার্থিতা বাতিল করা হয় উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ গৃহীত না হওয়ায়। এরকম ১৬-১৭ আসনে প্রার্থী শূন্য করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিলো এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ছিলো নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে এবং সিইসি তাতে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু আমরা ক্ষোভের সঙ্গে দেখলাম বিরোধী দলের প্রার্থী ও নেতাকমীদের ওপর আক্রমণ, মামলা, হামলা, বাধা দেয়া চলছে এবং ক্রমাগত তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই সরকার মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে না, নারীর পক্ষেও না, ধর্মবিরপেক্ষও না। এসব তাদের মুখের কথা। এটা তাদের ভোটের কথা। এই নির্বাচনে আমাদের বহু মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর তারা হামলা করেছে। এই সরকার বলে তারা নারীদের সম্মান করে। অথচ আমাদের নারী প্রার্থীদের ওপর হামলা করেছে তারা। তারা বলে তারা ধর্মনিরপেক্ষ, আর গতকাল তার প্রমাণ দিয়েছে আমাদের গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আহত করে। তারা ক্ষমতালোভী একটি দল মাত্র। তারা নারীদের পক্ষেও না, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেও না, ধর্মনিরপক্ষেও না।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘হামলা, বাধা ও আক্রমণ বিষয়ে আমরা সিইসির সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। তাকে বলেছি, এখন দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষ আপনি। আপনি ইচ্ছা করলে ব্যবস্থা নিতে পারেন। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। কিন্তু তিনি আক্রমণকারীদের পক্ষ নিয়েছেন। আজকে আমরা ২০ দল থেকে বলছি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে অক্ষম ও অনাগ্রহী। যিনি আক্রমণকারীদের পক্ষে নেন তাকে দিয়ে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সে কারণে তার পদত্যাগ দাবি করছি। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক একজন যোগ্য কমিশনার নিয়োগ দেয়ারও দাবি করছি।’

তিনি বলেন, ‘এতো কিছুর পরও আমরা নির্বাচনে আছি। নির্বাচন বর্জন না করে বা বানচাল করে আমাদের লাভ কি? আমরা কোনো আনন্দে নির্বাচন বানচাল করতে যাবো? নির্বাচন বানচাল করার আগ্রহ সরকারের। যেন তারা আরো ৫ বছর ভোট ছাড়া ক্ষমতায় যেতে পারে সে ব্যবস্থা করছে। আমরা চাই নিরপেক্ষ নির্বাচন। জনগণ যাকে ইচ্ছা ভোট দেবে। তাতে নৌকায় ভোট দিলেও আমাদের কোনো কথা নেই।’

সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ করে নজরুল বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সারা দুনিয়ায় যে সুনাম আছে, তারা নিজ দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে সেই সুনাম অক্ষুণ্ন রাখবে বলে প্রত্যাশা করি।’

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে গায়ের জোরে ক্ষমতায় এসে কি হবে? এরকম কত এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কথা মানুষ ভুলে গেছে। হয়তো জিতবেন। তাতেই কি সব শেষ হয়ে যাবে? আমরা না জিতলে কি সবকিছু শেষ হয়ে যাবে? জনগণ সব দেখছে। সরকার যে গণতন্ত্রকে তার সঠিক জায়গায় রাখছে না তার ফলাফল ভবিষ্যতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলতে পারছি না।’

সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত, এলডিপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment