ঢাকা-১ আসনে নেতাকর্মীরা বেঈমানি না করলে আ’লীগের জয় নিশ্চিত

 মাহবুবুর রহমান টিপু,দোহার(ঢাকা)প্রতিনিধি:

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশের দৃষ্টি এখন ঢাকা-১ আসনের দিকে।নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে পুরুষের চেয়ে, নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ২৮৭জন ভোটারের মধ্যে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪৯৩জনই নারী। পুরুষের চেয়ে নারী ভোটার বেশি ৬ হাজার ৬৯৯জন। ‘কেন এ আসনে নারী ভোটার বেশি’ এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, প্রবাসী অধ্যুষিত এই দুই উপজেলার বেশিরভাগ যুবকই প্রবাসী। তাদের বড় একটি অংশই কাজ করছেন সৌদি আরবে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাসবাস তাদের সিঙ্গাপুরে। এর বাইরে কুয়েত, দুবাই আর মালয়েশিয়ায় রয়েছে প্রচুর মানুষ।অন্যান্য দেশেও শ্রম দিতে গেছেন অনেকে। দুই উপজেলার বেশিরভাগ বাড়িরই অন্তত একজন পুরুষ বিদেশে শ্রমঘন কাজ করছেন। ফলে ভোটার লিস্টে নারীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর সংগত কারণেই নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা মন কাড়তে চাইছেন নারী ভোটারদের। দেশের শীর্ষ দুই শিল্পগ্রুপের দুই কর্ণধার এ আসনে প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী আলো ছড়াচ্ছেন। তারা হলেন-আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী, মোটরকার প্রতীকের যমুনা গ্রুপের পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। তিনি এ নির্বাচনী এলাকার বর্তমান সাংসদ। এ আসনে আরোও প্রতিদ্বন্দিতায় রয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী কামাল হোসেন(হাতপাখা), বিকল্পধারার প্রার্থী জালাল উদ্দিন(কুলা), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি) প্রার্থী আবিদ হোসেন(কাস্তে), জাকের পার্টি প্রার্থী সামসুদ্দিন আহমদ(গোলাপ ফুল) ও বাংলাদেশ বিপ্লবী পার্টি সিকান্দার হোসেন। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর থেকে ঢাকা-১ আসনে আওয়ামীলীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (জাতীয় পাটি)তাদের নির্বাচন প্রচারণার কার্যক্রম শুরু করে বেশ উত্তাপের সাথে। ফলে নির্বাচনের আমেজ সারা দোহার-নবাবগঞ্জে বিরাজ করছে। হামলা- মামলাসহ নৌকার প্রতিকের ক্যাম্পে আগুন দেওয়া সব মিলিয়ে সময়ের সাথে জমে উঠেছে বহুমুখী নির্বাচনী লড়াই। িিনর্বাচনের প্রচারণা শুরু হলেও বিএনপির প্রার্থীতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিকল্পধারার প্রার্থী জালাউদ্দিনের হাইকোর্টে রিট করার কারণে আইনি জটিলতায় ঢাকা-১ আসন থেকে বর্তমান বিএনপি প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। ফলে লড়াই এখন দ্বিমুখী লড়াইয়ে রুপ নিয়েছে। নির্বাচনের শেষ মূহুর্তে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বিশিষ্ট শিল্পপতি সালমান এফ রহমান(নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম(মোটরগাড়ী) অত্যান্ত ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। ইতোমধ্যে আ’লীগ প্রার্থী সালমান এফ রহমান দোহার-নবাবগঞ্জে ১৭৮ টি উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ভোটাদের ভোট প্রার্থণা করেছেন। অপরদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামও বেশ কয়েকটি উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ভোটাদের কাছে ভোট প্রাথর্ণা করছেন। অন্যান্য প্রার্থীরাও তাদের সাধ্যমতো নির্বাচনের প্রচারণা চালাচ্ছেন। আওয়ামীলীগ প্রার্থী সালমান এফ রহমানের মতো এতো বেশী সংখ্যক উঠান বৈঠক আর কোন প্রার্থী করতে পারেননি। উঠান বৈঠকের ফলে প্রার্থীরা ভোটাদের কাছাকাছি আসছে পেরেছেন বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন। দোহার –নবাবগঞ্জে মোট ভোটারসংখ্যা ৪ লাখ ৪০ হাজার ৪ শত ৫ জন। এতো অল্প সময়ে এ বিশাল সংখ্যার ভোটাদের কাছে একজন প্রার্থীর একার পক্ষে সরাসরি সাক্ষাৎ করা অনেক কঠিন ব্যাপার। উঠান বৈঠকের মাধ্যমেই বেশী সংখ্যক ভোটাদের সাথে অতি অল্প সময়ে সাক্ষাৎ করার একটি সহজ উপায়। সাধারণ ভোটাররা এটিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। দুই প্রার্থীই উঠান বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের ভোট আদায় করতে সচেষ্ট। তবে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে আছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থী সালমান এফ রহমান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এক নেতা বলেন, আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা বেঈমানি না করলে সালমান এফ রহমান তথা নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment