ছেলেকে মুখে তুলে খাওয়াচ্ছিলাম। খাওয়া নিয়ে বাহানা তার পুরনো। সকাল থেকেই একটা দুঃসংবাদে মনটা খুব খারাপ। কিন্তু নিজেকে ভুলে আমি ঠিকই বাহানা করে যাচ্ছি যাতে পুত্র কিছুটা খাবার খায়।
হঠাৎই বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠল। কি ই বা বয়স ছেলেটির। এমনি করেই হয়তো ছেলেবেলাতে খুব ঝামেলা করত খাবার খাওয়া নিয়ে। হয়তো বা খুব দুষ্ট ছিল অথবা খুব মুখচোরা। স্কুলে মার খেয়ে এসে লুকিয়ে কাঁদত। কপট অভিমান করত হয়তো মা,এত সরল কেন ছেলেটা।
কিন্তু এ সব ই এখন সুদূর অতীত। অপমৃত্যু নামক কঠিন দানব ডাঃ আকাশের মাকে সন্তান হারা করেছে। দুঃসহ জ্বলুনি ছাড়া ওর বাবা মা কাছের আত্মীয়, বন্ধু পরিজনের বুকে আর কোন অনুভূতির খোঁজ মিলবে না।
যেমনটা ঘটে একজন নারী যখন ধর্ষণের শিকার হয়ে খুন হন বা লোকলজ্জা, নিজের উপর সমাজের উপরে ঘৃণাতে আত্মহননের পথ বেছে নেন কোন হতভাগ্য তেমনই অনুভব হচ্ছে আমার।
একজন তরুণ উদীয়মান চিকিৎসক চিরাচরিত নিয়মে এক তরুণীকে ভালোবেসেছে। দীর্ঘদিনের ভালোবাসা জানাজানি হয়েছে। বছর ধরে চলমান সম্পর্কের পরে বিয়ে। বিয়ের কদিন আগে ছেলে জানল একাধিক পুরুষের সাথে হোটেলে রাত কাটায় এই নারী।
পৃথিবীতে এমন কোন লোকলজ্জা আছে যার কারণে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারল না ডা. আকাশ? নাই। তবু ছাড়তে পারল না। হয়তো এটাকেই অবু্ঝ ভালোবাসা বলে।
যারা ভাবে মনটাই আসল। শরীরে কোন পাপ নাই সেই সব ডাইনিরা ছয় বছরের প্রেমকে অস্বীকার করে অন্যের বিছানায় যেতে পারে শুনেছি। কিন্তু একদিকে এই ছেলেকেই বিয়ে করবে আর অন্য পুরুষের বিছানা সঙ্গী হবে এমন দু:শ্চরিত্র মেন্টালিটি ধারণ করা কোন শিক্ষিত নারী দুনিয়াতে আছে এই অপমৃত্যু না ঘটলে আমার মতো হয়তো পৃথিবীর অনেকেই তা জানতে পারত না।
আমরা মুসলিম। ধর্মীয় অনুভূতি থেকেই হয়তো শবই বরাতের পবিত্র রাতে পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার পরে ডাইনি দু;শ্চরিত্রা স্ত্রীকে ক্ষমা করে সুখী হতে চেয়েছিল ছেলেটি।
না হয়নি। এবার দেশে না। বিদেশে।বিদেশীদের সাথে। একজন স্বামীর নাকের
ডগাতে বসে ফোনের ম্যাসেন্জারে চালাচ্ছে ঘটে যাওয়া অনৈতিক পার্ভার্টেড
রতিক্রিয়ার দ্যোতনা আর ভবিষ্যৎ নোংরামির পরিকল্পনা।
ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
ডা. আকাশের মায়ের কষ্টে আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। আর খুব খুব খুব ঘৃণা
হচ্ছে ডা. মিতুর মা বাবার প্রতি। এমন সন্তান জন্ম দিয়েছেন? এমন কুশিক্ষা
দিয়ে সন্তান বড় করেছেন?
আপনাদের মত দায়িত্ব কর্তব্যহীন, ধর্মহীন, কুলাঙ্গার পিতা মাতার কারণে সুন্দরী নারী চেহারার ডাইনি পৃথিবীর বুকে দুই পা ফেলে হাটে।
নিজের প্রিয়তমা প্রেমিকা স্ত্রীর প্রতারণার কষ্টে নিজের জীবনকে শেষ করল এক প্রেমিক স্বামী। কিন্তু ডাইনি মিতুর প্রতারণা সমাজে অনেক অকারণ সন্দেহের জন্ম দিয়ে গেলো।
সরল প্রেমকে মানুষ এখন বোকামি ভাববে এই পার্ভার্টেড নারীর জন্য। আমরা ধর্ষকের বিরুদ্ধে মিছিল করি। ফাঁসি চাই। আজ আমি এক নারী হয়ে এই ডাইনি মিতুর ফাঁসি চাই।
আত্মহত্যা অবশ্যই কোন সমাধান না। ডা. আকাশ হয়তো এই চরিত্রহীনাকে বাদ দিয়ে বেঁচে থাকতে পারতেন। তবে তার মনের মৃত্যুর খবর আমরা কেউই নিতাম না তখন। তাই আইন পরিবর্তন করে হলেও এই আত্নহত্যার প্ররোচণাকারী নারী ডা. মিতুর ফাঁসি চাই।
একজন সন্তান হারা মা,ভালোবাসার অপরাধে তার পুত্র আজ জীবন দিল। যাকে ভালোবাসল সে বহাল তবিয়তে বেলেল্লাপনা করে বেড়াবে, এই সমাজে ওর মতো দু:শ্চরিত্র পুরুষদের সাথে নিয়ে আরো ঘর ভাঙ্গবে, মন ভাঙ্গবে। তার থেকে এই অধঃপতিত নারীর জায়গা হোক জেলখানার চৌদ্দ শিকের ভেতর।
পেটেলদের সাথে পার্ভার্টেড সেক্স ডেট না। ওর জন্য অপেক্ষা করুক মানবতা আর সমাজ সুরক্ষার ফাঁসির দড়ি
লেখক: ডা. শিরীন সাবিহা তন্বী, মেডিকেল অফিসার, রেডিওলোজি এন্ড ইমেজিং