এক নারী বাঁচিয়ে দেন মুশফিক-তামিমদের

এক নারী বাঁচিয়ে দেন মুশফিক-তামিমদের

Sony showroom

নিউ জিল্যান্ডে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের বাঁচিয়ে দিয়েছেন এক নারী। বাস থেকে নামার ঠিক আগের মুহূর্তে তিনি দৌড়ে এসে তামিম-মুশফিকদের বাধা দেন।

মুশফিকুর রহিমের বাবা মাহবুব হামিদ দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য জানান। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাংলাদেশে ফোন দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুশফিক। ঘটনা শুনে ভয়ে শিউরে ওঠেন স্বজনরা। পরে কয়েকবার ভিডিও কলে নিউ জিল্যান্ড থেকে কথা বলেন তামিম ইকবাল ও মুশফিক।

আমাদের বগুড়া প্রতিনিধি মাহবুব হামিদের বরাত দিয়ে জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোন আসে তার মোবাইল সেটে। তিনি রিসিভ করে কে বলার পরপরই অপর প্রান্ত থেকে কান্নাজড়িত কণ্ঠ বলে ‘আব্বা আমি’। প্রথমে বুঝে উঠতে পারেননি তিনি (মাহবুব হামিদ)। আবারও জিজ্ঞাসা করে নিশ্চিত হন তার ছেলে মিতু (মুশফিকের ডাক নাম)। কান্নার কারণে তিনি কিছুটা বিচলিত হন। কী হয়েছে বাবা? জিজ্ঞেস করতেই মিতু বলে ‘আব্বা এইমাত্র গোলাগুলি হলো, অল্পের জন্য আল্লাহ নিজ হাতে আমাদের বাঁচিয়েছেন। আমরা গাড়ি থেকে না নামার কারণে কোনো ক্ষতি হয়নি।

মুশফিকের বাবা বলেন, সকালে প্রেস কনফারেন্স শেষে তাদের (মুশফিকদের) মসজিদে নামাজে যাওয়ার কথা। প্রেস কনফারেন্সে তাদের দলের কথা বলতে কিছুটা বিলম্ব হয়। এ কারণে নামাজ শুরুর আগ মুহূর্তে তারা খেলোয়াড়দের বহনকারী গাড়িতে মসজিদের কাছাকাছি যেতেই বিপরীত দিক থেকে এক নারী দৌড়ে এসে তাদের গাড়ির গতিরোধ করেন। ওই নারীই মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে তাদের জানান। এরপর তারাও গুলির শব্দ শোনে এবং মসজিদ থেকে মানুষদের দৌড়ে পালাতে দেখে। গুলিবিদ্ধ একজন এসে তাঁদের গাড়ির সামনেও পড়ে যায়। তবে গাড়িতে থাকায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বেঁচে যায়।

মাহবুব হামিদ বলেন, ছেলের কাছে এই সংবাদ পেয়ে আমরা যারপরনাই বিচলিত হয়ে পড়ি। তার মা কান্নাকাটি শুরু করে। পরে আমি নিজে ছেলেকে মোবাইল করে বলি যেন তার মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে। পরে সে অন্তত: ৫ দফা ফোনে কথা বলেছে। শনিবার সকালের ফ্লাইটে তারা দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে বলে জানিয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে হেগলি ওভাল মাঠের কাছেই অবস্থিত আল নুর মসজিদ। এই মসজিদেই নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। শুক্রবার অনুশীলন শেষে সেখানেই জুম্মা নামাজ আদায়ে যাওয়ার কথা ছিল ক্রিকেটারদের।

বাংলাদেশ দলের ওপেনার তামিম ইকবাল এক টুইটে বলেন, ‘পুরো দল বন্দুকধারীদের হাত থেকে বেঁচে গেছে। ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। আমাদের জন্য দোয়া করবেন’।

নিউ জিল্যান্ড সিরিজ কাভার করতে যাওয়া ক্রিকইনফোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইসাম এক টুইট বার্তায় বলেছেন, হেগলি পার্কের কাছে মসজিদ থেকে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা পালিয়ে রক্ষা পেয়েছেন, যেখানে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তিন বাংলাদেশিসহ কমপক্ষে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৪৮ জন।

জানা গেছে, জুমার নামাজের সময় দুজন বন্দুকধারী ক্রাইস্টচার্চের ডিনস অ্যাভিনিউর আল নুর মসজিদ ও পার্শ্ববর্তী লিনউডের মসজিদে হামলা চালায়। স্ট্রিকল্যান্ড স্ট্রিটে একটি গাড়িবোমা হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

নিউজিল্যান্ড সরকারে একে সন্ত্রাসী হামলা বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment