নারী ইউপি সদস্যের কান ছিড়ে ফেললেন চেয়ারম্যান

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় আলেয়া খাতুন নামে ইউনিয়ন পরিষদের এক নারী সদস্যের কান ছিড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আরেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার দুপুরে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ উঠেছে, গতকাল ভিজিডি কার্ডের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে ইউপি সদস্য আলেয়ার সঙ্গে বিবাদে জড়ান উমারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মন্ডল। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করেন মতিন। এ সময় আলেয়ার বাম হাত ভেঙে যায় ও কানের লতি ছিড়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে রাতে তাকে টাঙ্গাইলের নাগরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে গিয়ে আলেয়া খাতুনের সঙ্গে কথা হলে আমাদের সময়কে তিনি জানান, ‘নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যান আমার প্রতি অন্যায় আচরণ করছেন। চলতি অর্থবছরের কোনও কার্ড আমাকে দেওয়া হয়নি। সে আমার চরিত্র নিয়েও কথা বলে। আমার নির্বাচনি এলাকার ভিজিডি কার্ডের বরাদ্দ চাইলে চেয়ারম্যান আমাকে মারপিট করে বাম হাত ভেঙে দেয় এবং কান ছিড়ে ফেলে।’

ভিজিডি কার্ডের অনিয়মের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ করায় তার ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আরেক ইউপি সদস্য আরফান আলী চেয়ারম্যানকে সহযোগিতা করেন বলেও অভিযোগ করেন আলেয়া।

আহত এই নারী সদস্যের ছেলে মিলন পাশা জানান, আমার মাকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মতিন মন্ডল ও তার সহযোগী ইউপি সদস্য আরফান আলীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহা. আবু তাহির বলেন, ‘দুপুরে আমি যখন অফিসে বসেছিলাম তখন নিচে শোরগোল শুনতে পেলাম। একজন আরেকজনকে গালাগালি করছেন। তাৎক্ষণিক আমি বিষয়টি ওসিকে বলি। পরে পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়। নারী সদস্য আলেয়া খাতুন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

তবে পুরো ঘটনার ব্যাপারে নিজের উপর আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান মতিন মন্ডল। আমাদের সময়কে তিনি জানান, ইউপি সদস্য আলেয়া খাতুন যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। বরং ভিডিজি কার্ডের কথা বলে ওই নারী সদস্যই জনসম্মুখে আমাকে কিলঘুষি দিয়ে জামার কলার ছিঁড়ে দিয়েছে।

চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্রই দুপক্ষ দুদিকে চলে গেছেন। থানায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment