চিঠিটি জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম ফেসবুকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে তিনি পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হককে ভাটাটি বন্ধের নির্দেশ দেন। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হক পুলিশ নিয়ে ইটভাটাটিতে অভিযানে যান। কিন্তু গিয়ে দেখেন ভাটাটি পরিচালনার জন্য উচ্চ আদালতের রিট রয়েছে। পরে তিনি মালিককে বুঝিয়ে সেটি বন্ধের কার্যক্রম গ্রহণ করেন।
সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, পার্বতীপুর-দিনাজপুর সড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে যমুনা ব্রিক্স নামের ইটভাটাটি। ভাটার চিমনি থেকে কয়েক গজ দূরেই ভূট্টা ক্ষেত। কয়েকশ’ গজ দূরে রয়েছে এমবি ব্রিক্স নামে আরও একটি ইটভাটা। দুই ভাটা থেকে দেড় থেকে দুইশ’ গজ দূরে হযরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
শিক্ষার্থী মিশু জানায়, ভাটার ধোয়ায় তার মতো বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর চোখে জ্বালা করে। ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারে না। ভাটাটি বন্ধ করে দিলে তারা ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারবে।
শিশুটির বাবা গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মমিনুল হক বলেন, ‘আমার মেয়ে নিজেই চিঠিটি লিখে আমার ফেসবুক আইডি থেকে সেটি পোস্ট করেছে। বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা হওয়ায় শিশুরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে। এছাড়া পুকুরের মাছের ফলনও দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জিনাত রেহানা বলেন, ভাটার কারণে বিদ্যালয়ের শিশুদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। তারা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে।
ইটভাটার মালিক হাসান শাহারিয়ার জানান, তারা উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করে ইটভাটা চালিয়ে আসছেন।
পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হক বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বুধবার দুপুর তিনটায় পার্বতীপুরের যমুনা ব্রিক্স নামে ইটভাটায় গিয়ে কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায় সেটির রিট পিটিশন রয়েছে। পরে ভাটা মালিককে বুঝিয়ে আপাতত ইটভাটাটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশুর ইটভাটা বন্ধের অনুরোধের চিঠি দেখি। এরই প্রেক্ষিতে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হককে ভাটাটি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন থাকায় আইনগতভাবে ভাটাটি বন্ধ করা না গেলেও পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির কথা বিবেচনা করে ভাটা মালিককে আপাতত ইট ভাটাটি বন্ধ রাখতে বলা হয়।’
পরবর্তীতে আইনগত বিষয়ে বিবেচনা করে ভাটাটির ব্যাপারে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।