রাজধানীর বনানীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এফ আর টাওয়ারটি সামান্য হেলে পড়েছে বলে মনে হয়েছে ভবনটির উপযোগীতা খতিয়ে দেখতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে। তারা বলছেন, এফআর টাওয়ারটি সংস্কারের আগে ব্যবহার করা যাবে না। এজন্য কমপক্ষে তিনমাস সময় প্রয়োজন।
রোববার (৩১ মার্চ) বেলা ১১ টার দিকে এফআর টাওয়ারের ব্যবহার উপযোগীতা খতিয়ে দেখতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) তদন্ত কমিটি ভবনটি পরিদর্শন করে।
কমিটিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন অধ্যাপক, রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী ও সচিব (উন্নয়ন) এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলি রয়েছেন। তাদেরকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত দলে থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, এফআর টাওয়ারের ভেতরে কলাম ও স্ল্যাব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংস্কারের আগে ভবনটি ব্যবহার করা যাবে না। ভবনটি এই মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনটি সামান্য হেলে পড়েছে বলেও মনে হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও ফায়ার সেফটি কোড অনুযায়ী সংস্কার ছাড়া ভবনটি এই মুহূর্তে ব্যবহার করা যাবে না। এই ভবন সংস্কারে কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে।
এতো সময় লাগার কারণ জানতে চাইলে এই শিক্ষক বলেন, ভবনে জরুরি নির্গমন পথ ছিল খুবই অপ্রশস্ত, কেবলমাত্র একটি ফ্লোরে ফায়ার ডোর ছিল, আরও বেশ কিছু জায়গায় ত্রুটি রয়েছে। এগুলো সংশোধন ছাড়া ভবনটি ব্যবহার করা যাবে না।
কমিটির আরেক সদস্য বুয়েটের অধ্যাপক রাকিব আহসান জানান, পরিদর্শনের সময় তারা দেখতে পান, জরুরি নির্গমন পথটি কোনো কোনো জায়গায় বন্ধ ছিল।
রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ হেলালী বলেন, প্রাথমিক পরিদর্শন শেষে ভবনটির কনক্রিট ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী পরীক্ষা করে দেখা হবে। ১৮ তলা ভবনটি ২৩ তলা করায় তা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে তা খতিয়ে দেখতেই পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে বনানীতে ২৩ তলা এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট আগুন নেভানো ও হতাহতদের উদ্ধারের কাজ করে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, রেড ক্রিসেন্টসহ ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত অনেক স্বেচ্ছাসেবী অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত সাতটায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন মারা গেছেন।