নুসরাতের পর স্বামীর দেয়া আগুনে মৃত্যু রোজিনার

নুসরাতের পর স্বামীর দেয়া আগুনে মৃত্যু রোজিনার

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর পর এবার লালমনিরহাটে স্বামীর দেয়া আগুনে অগ্নিদগ্ধ রোজিনা বেগম মৃত্যুর কাছে হার মানলেন। শনিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়।

রোজিনা বেগমের বাড়ি নীলফামারী জেলার জলঢাকা এলাকায়। তার স্বামী মো. আব্দুল্লাহ পাটগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিউপূর্বপাড়া এলাকার মোমিন মিয়ার ছেলে। ঢামেক হাসপাতাল থেকে নিহত রোজিনার শাশুড়ি রেজিয়া বেগম তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রোজিনার মৃতদেহ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌরসভার নিউ পূর্বপাড়ার বাড়িতে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

পাটগ্রাম থানা পুলিশ জানায়, গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিউপূর্বপাড়া এলাকার নিজ বাড়ির শোওয়ার ঘরের দরজা আটকিয়ে আবদুল্লাহ স্ত্রী রোজিনার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই গৃহবধুর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে প্রথমে তাকে পাটগ্রাম উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত আবদুল্লাহকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। পরে রোজিনার ভাই বাদী হয়ে পাটগ্রাম থানায় মামলা করলে ওই তাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদক চোরাচালানের একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রতিবেশিরা অভিযোগ করে বলেন, গৃহবধূ রোজিনাকে তার স্বামী আবদুল্লাহ নেশাগ্রস্থ অবস্থায় প্রায় শারীরিক নির্যাতন করতেন। নিজের সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে সব নির্যাতন সহ্য করে গৃহবধু রোজিনা তার স্বামীর বাড়িতেই ছিলেন।

অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু রোজিনার জবানবন্দীর বরাত দিয়ে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আলী জানান, ঘটনার দিন মাগরিবের নামাজের আগে গৃহবধু রোজিনা তার স্বামীকে আত্মীয় আসার খবর জানিয়ে বাড়ির বাথরুম মেরামত করতে বলেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে আবদুল্লাহ ঘরে থাকা কেরোসিন রোজিনার শরীরে ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

এতে তার গলার নিচ থেকে পা পর্যন্ত পুড়ে যায়। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে রোজিনাকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এই মামলায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

পাটগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আজিজুল হক দুলাল বলেন, এক সন্তানের জননী রোজিনা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিকভাবে ঘটানো হয়েছে। এখন ছোট্ট অবুঝ শিশুটি এতিম হয়ে বেঁচে রইল।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment