ওয়াসার এমডি প্রমাণ করুক, আমি পাগল : মিজানুর

ওয়াসার পানি দিয়ে তৈরি করা শরবত খাওয়াতে চাওয়া রাজধানীর জুরাইন এলাকার বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমানের মাথায় গোলমাল আছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। তবে ওয়াসার এমডির দেওয়া এমন বক্তব্যের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘ওয়াসার এমডি প্রমাণ করুক, আমি পাগল।’

আজ বুধবার সন্ধ্যায় দৈনিক আগামির সময় অনালাইন’র কাছে এ কথা বলেন মিজানুর রহমান।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘ওয়াসার এমডি একটি রাস্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান। আমি উনার একজন গ্রাহক। উনি যে কথা বলেছেন, ঢাকা ওয়াসার পানি “শতভাগ সুপেয়”, উনার এই কথা যে সত্য না সেটা নিয়েই আমি কথা বলতে চেয়েছি। আমি পাগল কী পাগল না, সেটা উনি প্রমাণ করুক। উনাকে (ওয়াসার এমডি) প্রমাণ করার জন্য চ্যালেঞ্জ করলাম।’

মিজানুর রহমান বলেন, ‘উনি আরও বলেছেন, কে যেন পেছন থেকে ষড়যন্ত্রকারী আছে। যেটা নাকি উনার কাছে তথ্য আছে। উনাকে প্রমাণ করার জন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম যে, এই দুটা উনি প্রমাণ করুক।’

পানির বিল বকেয়া আছে-এ কথা বলে মিজানুর রহমানকে প্রাণনাশের হুমকি

এ বিষয়ে মিজানুর রহমান বলেন, ‘আজ সকালে কয়েকজন লোকজন এসেছিল। তারা এসে ওয়াসার পরিচয় দিচ্ছিল। কিন্তু তারা আসলে ওয়াসার লোক কি না, সেটা যাচাই করতে চাইলেই তারা ক্ষেপে গিয়ে আমাকে হুমকি দেয়। আমি নাকি ওয়াসার বিল দেই নাই, ওয়াসার পানি চুরি করে খাই।’

পানির বিল দেওয়া প্রসঙ্গে মিজানুর আরও বলেন, ‘আমি নাকি বস্তি এলাকায় থাকি, আমাকে তারা এক প্রকার চোরই বলে চলে গেছে। আমি যে পানির বিলের কপি দেখাব তেমন কোনো সুযোগই দেয়নি তারা।’

এর আগে ঢাকা ওয়াসার পানি ‘শতভাগ বিশুদ্ধ’ বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি তাকসিম এ খান। পরে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এমডিকে ‘ওয়াসার সুপেয় পানি’ দিয়ে বানানো শরবত খাওয়াতে কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে যান মিজানুর রহমান। এ সময় তাদের সঙ্গে ঢাকা ওয়াসার পানি, চিনির প্যাকেট ও লেবু ছিল।

ওয়াসার সরবরাহ লাইনের সমস্যার কারণে প্রায় ৪০ ভাগ পানি ব্যবহারের অযোগ্য, এবার এ কথা স্বীকার করেন তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, ‘পাইপ ফেটে যে যায়, আর সেটাও ধরেন একেবারে কোনো  অ্যাক্সিডেন্ট ছাড়া ফাটে না। আর সেটারও মোটামুটি একটা স্ট্যাটিসটিক্স আছে। আর এটাতো পার্ট, আপনি হাউ ক্যান ইউ মিক্সড যে একটা আনপ্ল্যান সিটি ঢাকা, বেগার সিটি, ডেভেলপিং কান্ট্রি তার মধ্যে ১০০% প্ল্যানড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট। সেটা কি হয়, সেটা কি সম্ভব? তো এখানে ঠিকই আছে, এখানে নতুন কিছু নাই।’

আজ বুধবার বেসরকারি এক টেলিভিশনকে ফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন তাকসিম এ খান।

ওয়াসার এমডি বলেন, ‘আমার যেটা ইস্যু ছিল সেটাতো অন্য। সেটাতো হলো টিআইবি যে ঘটনা বলেছে, টিআইবি মানে ইউ নো হোয়াট ইজ টিআইবি। যাই হোক সেটা থাক। টিআইবির এই রিপোর্টটা আমি প্রত্যাখ্যান করছি। এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা করতে আমি রাজি না।’

টেলিভিশনের ওই প্রতিবেদক এমডিকে প্রশ্ন করেন, এখন ওরা যেহেতু একটা ইস্যু তৈরি করেছে-সেক্ষেত্রে ওরা সফল হয়েছে।

এ সময় পানি নিয়ে ভুক্তভোগী নগরবাসীর ওয়াসা ভবনে প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ‘সাজানো নাটক’ উল্লেখ করে ওয়াসার এমডি বলেন, ‘আমরা আমাদের স্টাডি থেকে পেয়েছি যে, লিকেজ থেকে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়। এখন জানা দরকার, তাকে দিয়ে এই ষড়যন্ত্র করালো কে? এটা একটা সাজানো নাটক।’

ওয়াসার এমডি বলেন, ‘এটা তার বাসার পানি না। তাহলে সে আসল, তার বাসার পানি নোংরা এবং সে এটার প্রতিবাদ জানাতে এসেছে। দ্যাটস নট অ্যা ট্রু। তাকে কে সহযোগিতা করছে, এটা জানা দরকার। অনেকেই তো চায় এই সরকারক হেয় প্রতিপন্ন করতে।’

এমডি বলেন, ‘তার ভাই তো বলে দিচ্ছে, আচ্ছা আপনি খেয়াল করেছেন, যে সে তার অ্যাড্রেস দেয় না। তারপরও তার বাসায় যাওয়া হয়েছে। এখন সে বলে যে ওইটা আমার বাসা না, আমার শ্বশুরের বাসা।’

মিজানুরের ভাই কী বলেছেন, আবার জানতে চাইলে তাকসিম এ খান বলেন, ‘তার ভাই বলেছে, দেখেন ও (মিজানুর) একটু “ই” মানে কী বলবো আমি। উনার ভাষায়, তার মাথায় একটু গোলমাল আছে। গোলমাল না তার মাথায় গোলমাল আছে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment