দোহারে পদ্মা নদীতে প্রভাবশালীদের মাটি উত্তোলনের উৎসব

 মাহবুবুর রহমান টিপু,দোহার(ঢাকা)প্রতিনিধি:

দোহারে পদ্মা নদীতে প্রভাবশালীদের ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর বুক চিওে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এর ফলে উপজেলার মৈনটঘাট এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার আবাদী জমি সম্প্রতি নদী ভাংঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে। ঢাকার দোহার উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে চলা প্রমত্ত পদ্মা নদী।নদীর ভাঙ্গনের গ্রাসে অগণিত দোহারের মানুষ আজও ভূমিহীন সর্বহারা। ফসলি জমি, ঘর-বাড়ি, বাপ- দাদার পৈতিক ভিটা হারিয়ে অন্যের জায়গায় কোন মতে বেঁচে আছে এই পদ্মাপারের মানুষ গুলো। তাদের এখন একটাই দাবি- অবিলম্বে নদীর বুক চিরে মাুিট উত্তোলন বন্ধ করা হোক।এর ফলে ভাঙ্গন বন্ধ হবে,নদীর পাড়ে নতুন জনবসতি গড়ে উঠবে । গত শনিবার থেকে অনুসন্ধানীতে জানা যায়,উপজেলার মৈনটঘাট,চর- মাহমুদপুর,চর লটাখোলা,বিলাশপুর,নারিশা ও মুকসুদপুরের পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ও পদ্মা নদীর বুক চিরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা।স্থানীয়রা জানান,প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে প্রভাবশালী একাধিক বালু ব্যাবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মাটি উত্তোলন করে আসছে।এই মাটি আবার ড্রেজার পাইপের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে।বর্তমানে ট্রাক প্রতি বালু বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ টাকা করে।স্থানীয়রা আরোও জানান,সম্প্রতি সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর গত দুই মাস আগে উপজেলা ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে এই সিন্ডিকেটের পাচঁটি শ্যালো মেশিন জব্দ করেন।পরবর্তীতে তারা পুনরায় আবারও সক্রিয় হয়ে পদ্মা নদীতে বড় বড় একাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পদ্মা নদীর বুক চিরে বিভিন্ন স্থানে মাটি উত্তোলন করছে প্রকাশ্যে।এর ফলে উপজেলার মৈনটঘাট এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার আবাদী জমি সম্প্রতি নদী ভাংঙ্গে বিলীন হয়েছে।স্থানীয়রা বিষয়টিতে সুদৃষ্টি দিতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান ।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে দোহারের জনসাধারনের একটাই দাবি ছিল পদ্মা নদীতে ড্রেজিং বন্ধ করা এবং পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষন করা।অবশেষে ঢাকা-১ আসনের সাংসদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের একান্ত প্রচেষ্টায় দোহারের পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা ও নদীতে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙ্গন বন্ধ করা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকার কৃষিখাতেও ব্যাপক উন্নয়ন ঘটানো। আর এসকল কর্মকান্ড পুরোটাই ভেস্তে যাচ্ছে দোহারে পদ্মা নদীতীরবর্তী জমিতে কিংবা নদীতে ড্রেজার, কাটার ও শ্যালো মেশিন বসিয়ে প্রভাবশালীদের মাটি উত্তোলনের ফলে। এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা জানান,গত দুইমাস আগে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে অবৈধ মাটি উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত পাচঁটি মাটি কাটার ও শ্যালো মেশিন আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।আবারও বসলে অভিযান চালানো হবে। এ বিষয়ে দোহার উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান মো.আলমগীর হোসেন সমকালকে জানান,বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন