ভাগ্য খুলছে তিন বিএনপি নেতার

কারাগারে খালেদা জিয়া! সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন লন্ডন নেতা। একের পর এক কপাল খুলছে বহু নেতার। সবাই এখন তাকিয়ে আছেন লন্ডনের দিকে। কার কখন সুসংবাদ আসে।

খালেদা জিয়ার পরামর্শ, স্থায়ী কমিটিতে প্রস্তাবনা, কাউন্সিল ছাড়াই দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও বেগম সেলিমা রহমানকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ঘোষণার পর এবার আরো তিনজনের নাম আসছে।

রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, নতুন তিনজনের নাম আসছে সেনা কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে। লন্ডন নেতা তারেকের হাতে তিনজনের নাম সিলেক্ট রয়েছে। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ও পেশাজীবী তালিকা থেকে বাদ পড়ায় দলের ভেতরে অনেকের ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র দৈনিক আমার সংবাদকে জানিয়েছে, ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে আবদুল্লাহ আল নোমান ও আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে সিলেক্ট করেছেন তারেক জিয়া। দলের এ দুঃসময়ে অর্থনৈতিক সাপোর্টের জন্য এ দুইজনকে অনেক বেশি প্রয়োজন।

যদিও আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে নিয়ে দলের ভেতর বহু আগে থেকেই বিতর্ক রয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তথ্য ফাঁসের নাটের গুরু হিসেবে মিন্টুর নাম বারবার এসেছে। দলের বহু ফোরামে মিন্টুকে নিয়ে অভিযোগ এসেছে— আব্দুল আউয়াল মিন্টু সরকারের এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন।

তবুও মিন্টুর অর্থের দিক বিবেচনায় এবার স্থায়ী কমিটির নতুন মুখের তালিকায় এ বিতর্কিত নেতার নাম রয়েছে। ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে আবদুল্লাহ আল নোমানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে অনেকে এ নিয়ে নীরব।

অন্যদিকে সেনা কর্মকর্তা ক্যাটাগরিতে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদের নাম রয়েছে তারেকের হাতে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, হাফিজ উদ্দিনকে এবার স্থায়ী কমিটিতে স্থান না দিলে এবার তিনি দল ত্যাগ করে আলাদা দল গঠন করবেন। তাই হাফিজকে স্থায়ী কমিটিতে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তারেক জিয়া।

তাছাড়া হাফিজের গঠনমূলক দলীয় কৌশল অনেক নেতারই পছন্দ। শীর্ষ নেতাদের অনুরোধও ছিল হাফিজের ব্যাপারে। অন্যদিকে পেশাজীবী ক্যাটাগরিতে ডা. এ জেড এম জাহিদসহ কয়েকজনের নাম থাকলেও আপাতত তাদের নাম আসছে না। পরে তারা বিবেচিত হতে পারেন।

গতকাল রাতে আমার সংবাদকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে কমিটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যেই দলটির পক্ষ থেকে এ কয়েকজনের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া হবে।

অন্যদিকে দলটির স্থায়ী কমিটির শূন্য পদে আরো আলোচনায় রয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

এ বিষয়ে আব্দুল আউয়াল মিন্টু সাংবাদিকদের বলেন, আমি যেখানে আছি ভালো আছি। তবে দল যদি যোগ্য মনে করে স্থায়ী কমিটির সদস্য করে, দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত আছি। অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, দল যা ভালো মনে করছে, সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমাকে দিলে সাধ্যমতো দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করব।

ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বলেন, এসব বিষয়ে কথা বলা আমার জন্য বিব্রতকর। আরো আগেই আমার স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ার কথা। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান ব্যক্তিগত কারণে দীর্ঘদিন স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন না।

আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন চৌধুরী মামলা জটিলতায় রয়েছেন ভারতে। এমন পরিস্থিতিতে স্থায়ী কমিটির শূন্যপদগুলো সমন্বয়ে পুনর্গঠন জরুরি ছিল। তাই তারেক জিয়া এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কোনো নেতা অসুস্থ থাকতে পারেন, বিদেশে যেতে পারেন। এ কারণে তাদের বৈঠকে কোরাম সংকটের সৃষ্টি হয়। যদি এই পদগুলো পূরণ হয়, তাহলে এই সংকট আর থাকবে না।

আপনি আরও পড়তে পারেন