বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই নারীকে ধর্ষণ, একজন গর্ভবতী

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই নারীকে তিন বছর ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে মিজানুর রহমান বাবু নামে এক গার্মেন্টস কর্মীর বিরুদ্ধে। এদিকে বিয়ের দাবিতে ওই দুই নারী বিয়ের দাবিতে ঢাকা থেকে রংপুরের তারাগঞ্জের মুন্সিপাড়া গ্রামে বাবুর বাড়িতে যান। দুজনের মধ্যে একজন গর্ভবতী। তাদের আসার খবর জানতে পেরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন বাবু।

এদিকে ওই দুই নারীকে ভয়ভীতি তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের শিকার দুজনের মধ্যে একজনের বাবা অভিযোগ করেন, আজ রোববার সকালে বাবুর পরিবার ও স্থানীয় প্রভাশালীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে বাবুর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী নারীর স্বজন ও স্থানীয় চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, মুন্সিপাড়া এলাকার জহুরুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান বাবু ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। গত ৩ বছর থেকে তিনি একই গার্মেন্টেসের দুই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন।

অভিযোগ তোলা দুই নারীর মধ্যে একজন স্বামী পরিত্যক্তা। জামালপুর জেলা তার বাড়ি। বাবুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের কারণে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। অপরজনের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়।

তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি দুজনই জানতে পারেন তাদের সঙ্গে একই সময়ে সম্পর্ক গড়েন বাবু। বিষয়টি জানার পর দুজনই বাবুকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু তাদের কোনো কিছু না জানিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন বাবু।

বাবুর বাড়ির ঠিকানা জেনে ওই দুই নারী একসঙ্গে তারাগঞ্জে যান গত শুক্রবার। কিন্তু বাবুর পরিবার তাদেরকে বাড়িতে উঠতে দেননি। তারা পার্শ্ববতী একটি বাড়িতে অবস্থান নেন। এই অবস্থায় আজ রোববার সকালে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে সাক্ষর নিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেন বাবুও পরিবার ও স্থানীয় প্রভাশালীরা। পরে প্রাণের ভয়ে ওই দুই নারী ও তার অভিভাবকরা সেখান থেকে চলে আসেন।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান বলেন, ‘মেয়ে দুটির অভিযোগে শুনেছি। তাদের দুজনের সঙ্গেই বাবু শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এর মধ্যে জামালপুরের মেয়েটি গর্ভবতী। রোববার সকালে গোবিন্দগঞ্জের মেয়েটির বাবা এসে তার মেয়েকে নিয়ে যায়। তবে জামালপুরের মেয়েটি এখন কোথায় আছে বলতে পারব না।’

তবে, জোর করে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। বিষয়টি  শোনার পর আমরা থানার ওসিকে জানিয়েছি।’

মুঠোফোনে গোগিন্দগঞ্জের মেয়েটির বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মেয়েকে নিয়ে গোবিন্দগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন তিনি।  বাবুর লোকজন তাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন; যাতে তারা মামলা না করতে পারেন। তাই ধর্ষণের মামলা করতে পারেননি তারা। প্রাণের ভয়ে সেখান থেকে ফিরে গেছেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বাবুল বলেন, ‘বিষয়টি ধর্ষণের পর্যায়ে পড়েছে। আমি ওদেরকে থানায় যেতে বলেছি। এ ধরনের প্রতারণা করে ধর্ষণের ঘটনার বিচার হওয়া উচিত।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিন্নাত আলী বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি মেয়ে দুটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমার কাছে কেউ আসেনি। বিষয়টি ঢাকার। শুনেছি ওরা ঢাকা গিয়ে মামলা করবে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন