প্রাণভরে দুবাইয়ের শাসকের স্ত্রী লন্ডনে লুকিয়ে আছেন

বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া দুবাইয়ের শাসকের স্ত্রী লন্ডনে লুকিয়ে আছেন। স্বামী ধনকুবের বাদশাহ শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দুই সন্তানসহ দেশ ছাড়েন প্রিন্সেস হায়া আল হোসাইন।

বিবিসি জানায়, স্বামীর ভয়ে প্রাণ নিয়ে আতঙ্কে আছেন ৪৫ বছর বয়সী প্রিন্সেস হায়া। লন্ডনে লুকিয়ে থেকে জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন তিনি।

নতুন জীবন শুরু করতে দেশ ছাড়ার সময় ৩১ মিলিয়ন ডলার নিয়ে পালিয়েছেন প্রিন্সেস হায়া। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৬২ কোটি ১৬ লাখ টাকার চেয়েও বেশি। ছেলে জায়েদ (৭) এবং মেয়ে আল জালিলাকেও (১১) সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন তিনি এমনটা ধারণা করা হচ্ছে।

প্রিন্সেস হায়া জর্ডানের বাদশাহ কিং আবদুল্লাহর বোন। ২০০৪ সালে তিনি দুবাইয়ের শাসককে বিয়ে করেন। ৬৯ বছর বয়সী ধনকুবের শাসকের ষষ্ঠতম স্ত্রী তিনি। শেখ মোহাম্মদ আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং একই সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রীও। তিনি দুবাইয়ের শাসকও। ধারণা করা হয় তিনি ৯০০ কোটি ডলারের সম্পত্তির মালিক।

জর্ডানের রাজপরিবারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, শাসক পরিবারের গোপন কিছু বিষয় জেনে যাওয়ায় তিনি প্রাণভয়ের আশঙ্কায় আছেন প্রিন্সেস হায়া।

গত বছর দুবাই ছেড়ে সমুদ্রপথে পালিয়ে যান দুবাই শাসকের আরেক স্ত্রীর মেয়ে শেখ লতিফা। ভারত উপকূলে সশস্ত্র ব্যক্তিরা তাদের বহনকারী নৌযানটি আটক করে তাকে দুবাই ফিরিয়ে নিয়ে যায়। মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শেখ লতিফা অপহরণ করা হয়েছে।

প্রিন্সেস হায়ার একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, শেখ লতিফার দুবাই থেকে পালিয়ে আবার রহস্যজনকভাবে সেখানে ফিরে আসার পেছনের কিছু বিষয় জানতে পারেন প্রিন্সেস হায়া। ফলে একপর্যায়ে তার স্বামীর পরিবার থেকে চাপ আসতে থাকে। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেন।

তিনিও অপহরণের শিকার হতে পারেন বলে এমন আশঙ্কায় শেষমেশ তিনি লন্ডনে পালিয়ে গেছেন। এক জার্মান কূটনীতিকের সহযোগিতায় গোপনে দেশ ছাড়েন প্রিন্সেস হায়া। এ ঘটনায় আরব আমিরাত ও জার্মানির মধ্য কূটনৈতিক সম্পর্কে রীতিমতো ফাটল দেখা দিয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান জানিয়েছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাক্তন স্ত্রীকে ‘বিশ্বাসঘাতক ও প্রতারক’আখ্যা দিয়ে কবিতা লিখেছেন বাদশাহ শেখ মোহাম্মদ। তিনি বাদশাহের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ চাচ্ছেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা প্রিন্সেস হায়াকে গত মে মাস থেকে জনসম্মুখে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি ফেব্রুয়ারি থেকে তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি সরব নেই।

আপনি আরও পড়তে পারেন