সৌদি আরবের একটি সংগীত উৎসবে মার্কিন র্যাপ সঙ্গীত শিল্পী নিকি মিনাজ অংশ নেবেন বলে ঘোষণা আসার পর দেশটির সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন নিকি মিনাজের পোশাক এবং খোলামেলা গানের বক্তব্য রক্ষণশীল রাজতন্ত্রের এই দেশটির সঙ্গে ঠিক খাপ খায় না।
১৮ জুলাই জেদ্দা ওয়ার্ল্ড ফেস্টে এই র্যাপারের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। সৌদি আরবে বিনোদনের ওপর থেকে কড়াকড়ি তুলে নেয়া আর শিল্প খাতের প্রসারের সর্বশেষ উদাহরণ এই কনসার্ট।
তবে ঘোষণাটি আসার পর থেকেই টুইটার, ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছেন ব্যবহারকারীরা।
‘কল্পনা করুন যে, তিন বছর কোমায় থাকার পর আপনি জেগে উঠলেন আর প্রথমেই শুনতে পেলেন যে, নিকি মিনাজ সৌদি আরবে একটি সংগীত উৎসবে গান গাইতে যাচ্ছেন। আমি সত্যি মনে করতাম যে, অন্য একটা পৃথিবীতে আমি চলে গেছি।’ একজন লিখেছেন।
আরেকজন প্রশ্ন করেছেন যে, আয়োজকরা নিকি মিনাজের সঙ্গে যোগাযোগ করার আগে গুগলে তার সম্পর্কে জেনে নিয়েছে কিনা? ‘সৌদি আরবের কেউ নিশ্চয়ই নিকি মিনাজের ব্যাপারে গুগল করেনি, কেউ কি করেছে?’ টুইটারে লিখেছেন কবির তানেজা।
তবে সব প্রতিক্রিয়া যে এরকম হালকা ধরণের তা নয়।
একজন টুইট করেছেন যে, ইসলামের পবিত্র নগরী মক্কার কাছাকাছি বিবেচনায় মিনাজের অনুষ্ঠান আয়োজন করা অসঙ্গত হবে।
টুইটারে একটি ভিডিওতে মাথায় হিজাব পরা একজন নারী প্রশ্ন তুলেছেন, কেন এই সংগীতশিল্পীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যখন সৌদি নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক।
‘তিনি তার নিতম্ব ঝাঁকিয়ে গান গাইবেন আর তার সব গানই যেখানে যৌনতা ঘিরে, আর এরপর আপনি আমাকে বোরকা পড়তে বলবেন, সেটা কিভাবে হয়?’ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
তবে নিকি মিনাজের অনুষ্ঠান নিয়েই সৌদি আরবে প্রথম এ ধরণের বিতর্ক শুরু হয়েছে তা নয়।
এর আগে মারায়া ক্যারিকে সৌদি আরবে অনুষ্ঠান না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল মানবাধিকার কর্মীরা। যদিও তিনি সেই আহ্বানে সাড়া দেননি।
শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পর র্যাপার নেলি সমালোচনার মুখে পড়েন।
বেশ কিছুদিন ধরে দেশটির বিনোদনের ওপর থেকে বেশ কিছু কড়াকড়ি তুলে নিয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, যিনি দেশটির অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে চান।
দেশটির বিনোদন বিভাগের প্রধান, তুর্কি আল-শেখ জানুয়ারিতে একটি টুইট করে তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা জানিয়েছেন।
সেখানে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ চাইলে, পরবর্তী ধাপের বিনোদনের মূল লক্ষ্য হবে নানা উৎসব, সার্কাস, মোবাইল থিম পার্ক, তরুণ-তরুণীদের বিনোদনের জন্য নানা কর্মসূচী নেয়া আর দেশীয় বিনোদন কোম্পানিগুলোকে সহায়তা করা।’