বাংলায় ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে এ বার মুখ খুললেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তাঁর কথায়, ‘‘লোককে প্রহার করতে হলে এখন এ সব বলা হচ্ছে।’’ বাংলায় এ সব ‘ইদানীংকালে’র আমদানি। বাংলা সংস্কৃতিতে কোনও কালেই এ ধরনের স্লোগানের কোনও জায়গা ছিল না।
৫ জুলাই শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘মা দুর্গা শব্দবন্ধটি বাঙালি জীবন ও সংস্কৃতির সঙ্গে যেমন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত, জয় শ্রীরাম কিন্তু তা নয়। জয় শ্রীরাম স্লোগান বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না৷ ইদানিং দেখছি রাম নবমী বেশ জনপ্রিয় হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে; আগে কখনও শুনিনি।’
অমর্ত্যের কথায়, ‘আমি একদিন আমার ৪ বছরের নাতনিকে জিগ্গেস করলাম, তোমার প্রিয় দেবতা কে? ও উত্তর দিল, মা দুর্গা। আমাদের জীবনের সঙ্গে মা দুর্গা শব্দবন্ধটি প্রবল ভাবে জড়িয়ে। আমার মনে হয়েছে, জয় শ্রীরাম স্লোগান ব্যবহার করা হয়, মানুষকে গণপিটুনি দেওয়ার জন্য।’
দেশের ধর্মীয় হিংসা ও অসহিষ্ণুতা নিয়ে এর আগেও একাধিক বার মুখ খুলেছেন অমর্ত্য সেন। লোকসভা ভোটের দেশে গেরুয়া ব্রিগেড যখন রাম মন্দির তৈরি নিয়ে হাওয়া গরম করছিল, তখন ধর্মীয় ইস্যুতে মাতামাতিতে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তাঁর মত ছিল, বেকারত্ব, দেশের আর্থিক বৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি থেকে নজর ঘোরাতেই রাম মন্দির নিয়ে মাতামাতি করছে বিজেপি সরকার।
অমর্ত্য সেন বলেছিলেন, ‘একজন সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে আমার মনে হয়, বেকারত্ব, আর্থিক বৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি থেকে নজর ঘোরাতেই রাম মন্দির, গোরক্ষা, শবরীমালা-সহ ধর্মীয় বিষয় গুলি নিয়ে মাতামাতি করা হচ্ছে। আর্থিক বৃদ্ধির হার যদিও বেশি, কিন্তু তাতে গরিবের জীবনযাত্রার মানোন্নতি হয়নি৷ ঠিক এই জায়গাতেই, গোরক্ষা বা মন্দিরে নজর ঘোরানো প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’