সঠিক মাপের বালিশে মিলবে প্রশান্তির ঘুম

ঘুম হলো মানুষকে জীবনে একাটি অপরিহার্য উপাদান। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমানের ঘুম। আর ভালো ঘুমের জন্য যেমন ভালো বিছানা প্রয়োজন, তেমনি বালিশটাও ভালো হওয়া প্রয়োজন। বালিশটি অবশ্যই আরামদায়ক হওয়া চাই। ঘুমানোর বালিশ ঠিক না হলে অনিদ্রা, মাথাব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা, ক্লান্তি, অবসাদ হতে পারে।

বালিশ নিয়ে অনেকেই খুব খুঁতখুঁতে হন৷ নিজের প্রিয় বালিশটি ছাড়া ঘুমাতে পারেনা অনেকেই৷ উপযোগী বালিশের অভাবে ঘুমই হয় না সারারাত৷ ঘরে ঘরে এমনই কিছু অদ্ভুত সমস্যা দেখা যায় প্রতি রাতেই৷

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ জানান, সঠিক বালিশের ব্যবহার বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সঠিক বালিশের ব্যবহার না হলে ঘাড়, কাঁধ এসব অঙ্গে ব্যথা হতে পারে। বালিশ নির্বাচনে ফোম ব্যবহার না করে তুলার বালিশ ব্যবহার করাই ভালো। বালিশ বেশি উঁচু হবে না, আবার খুব নিচুও হবে না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিকেল অফিসার ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু বলেন, কে কীভাবে ঘুমায় সেটার ওপর নির্ভর করে বালিশ নির্বাচন করতে হবে। এমনভাবে বালিশ ব্যবহার করতে হবে যেন মেরুদণ্ড সোজা থাকে। সাধারণত বালিশের উচ্চতা চার থেকে ছয় ইঞ্চি হতে পারে। তবে শারীরিক গঠন অনুযায়ী বালিশের উচ্চতা বাড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাথার আকারের ওপর নির্ভর করে আপনার জন্য সঠিক বালিশ কোনটি। যেমন মাথার বড় বলে কিং বা কুইন সাইজের বালিশ নিন। আর মাথা ছোট হলে বালিশও হবে ছোট।

অনেকেই ফোমের বালিশ ব্যবহার করেন, কিন্তু তা শরীরের জন্য উপকারী নয়। কার্পাস বা শিমুল তুলার বালিশ শরীরের সুস্থতা ও ঘুমের জন্য বালিশ বেশি উঁচু হবে না আবার খুব নিচুও হবে না। বিশেষজ্ঞরা খুব শক্ত বা নরম বালিশও কিন্তু ব্যবহারে বারণ করেন।

আপনার সেই সাধের বালিশ পুরনো হলে নতুন বালিশ নির্বাচন করবেন কিভাবে? দেখে নিন কোন ধরণের বালিশ ঘুমের জন্য আদর্শ৷

১। আকৃতি

বালিশের আকৃতি আপনার পছন্দ মতোই নির্বাচন করতে পারবেন। তবে খুব বেশি ছোট বালিশে আপনার ঘুম ভাল হবে না। মিডিয়াম, লার্জ, স্ট্যান্ডার্ড, কিং, কুইন ইত্যাদি নানা মাপের তৈরি করা বালিশ বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এর থেকে আপনার পছন্দসই একটি বালিশ বেছে নিতে পারেন।

২। বালিশের উচ্চতা

অতিরিক্ত উঁচু বা একদম নিচু বালিশ ঘুমের জন্য এবং স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভাল নয়। বালিশের উচ্চতা হওয়া উচিত মাঝারি। বালিশের উচ্চতা এমন হওয়া উচিত, যাতে কাঁধ বা ঘাড় না বাঁকিয়ে মোটামুটি সোজা বা সমান্তরাল রেখে শোয়া যায়। যদি এক পাশে ফিরে শোয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে বিছানায় শোয়ার পরে কাঁধের সঙ্গে গলার উচ্চতা যত টুকু তত টুকুই হওয়া উচিত বালিশের উচ্চতা। আর যদি আপনি চিৎ হয়ে শুতে পছন্দ করেন, তাহলে আপনার ঘাড় এবং বালিশের উচ্চতা সমান্তরালে থাকা উচিত।

৩। বালিশের উপকরণ

বালিশের উপরকরণ প্রাকৃতিক হওয়াই ভাল। ফোমের বালিশ বেশ নরম হলেও ঘুমানোর জন্য মোটেই তেমন আরামদায়ক নয়। এ ধরণের বালিশে স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হয়। তাই তুলার তৈরি বালিশই ভাল ঘুম এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

৪। বালিশের কভার

বালিশের কভার খুব বেশি খসখসে হওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে কারুকাজ করা চাদরের সঙ্গে যেই বালিশের কভারগুলো দেওয়া থাকে সেগুলো রাতে ঘুমানোর সময় ব্যবহার করা উচিত না। বালিশের কভার হিসেবে নরম সুতি কাপড়ের কিংবা সার্টিন কাপড়ের কভারই সবচেয়ে ভাল।

আপনি আরও পড়তে পারেন