বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্রীর জ্ঞান ফেরেনি ৭ দিনেও

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মরিয়ম সুলতানা মুন্নীকে ভুল ইনজেকশন পুশ করার প্রমাণ মিলেছে। এ ঘটনায় দুই নার্সকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি।

গত রোববার গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে তদন্ত কমিটি এ প্রতিবেদন জমা দেয়।

এদিকে ঘটনার সাত দিন অতিবাহিত হলেও মুন্নীর জ্ঞান ফেরেনি। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে ভুল ইনজেকশন দেওয়া দুই নার্স ও কর্তব্যরত চিকিৎসককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিতে আজ সোমবার সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চন্দ্রদিঘলীয়ায় মানববন্ধন করেছে মুন্নির গ্রামবাসী। পরে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিও দেন।

এ বিষয়ে ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ ও কুহেলিকার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে কমিটি। এছাড়া মরিয়ম সুলতানা মুন্নীর চিকিৎসক সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তপন কুমার মণ্ডলকে ভবিষ্যতে আরও পেশাদারিত্ব ও সতর্কতার সাথে কর্তব্য পালনের সুপারিশ করা হয়েছে।’

আজই তদন্ত প্রতিবেদন সেবা পরিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গত ২০ মে মরিয়ম সুলতানা মুন্নী পিত্তথলিতে পাথরজনিত সমস্য নিয়ে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরের দিন তার অপারেশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন সকালে গাইনি ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ ও কুহেলিকা ভুল করে মুন্নীর শরীরে অজ্ঞান করার ইনজেকশন পুশ করেন। এতে তৎক্ষণিক মুন্নী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে মুন্নীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটলে তাকে খুলনার শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতারে রেফার করা হয়। কিন্তু সেখানেও তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনার শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।

অপরদিকে, মুন্নীর চাচা জাকির হোসেন বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ থানায় শেখ সাযেরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তপন কুমার মণ্ডল, হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ ও কুহেলিকাকে আসামি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন