টিনএজারদের ব্রণ সমস্যায় করণীয়

বয়োসন্ধির একটি সাধারণ রোগ হলো ব্রণ। সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে (২৫ বছর বয়সের মধ্যে) মুখের ব্রণ মিশে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি বহু বছর থাকতে পারে। শতকরা ৯০ ভাগ টিনএজার এ রোগে আক্রান্ত হয়। ব্রণ মুখমণ্ডল বিশ্রী করে ফেলে। এতে দাগ বা গর্ত যাতে না হয়, তাই সৌন্দর্য-সচেতন অনেকেই এ রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। ব্রণ কেন হয়, তার সঠিক কারণ এখনো নির্ণীত হয়নি।

তবে লোমকূপ ও তার সঙ্গে অবস্থিত তেলগ্রন্থির মুখের ত্রুটি, বয়োসন্ধিকালে এন্ডোজেন নামক হরমোনের আধিক্য, পি একনি নামক এক ধরনের জীবাণুর আক্রমণ ব্রণের কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়। এ ছাড়া বংশগত কারণেও ব্রণ হতে পারে।

ব্রণের আধুনিক চিকিৎসা : বর্তমানে অনেকভাবেই ব্রণের চিকিৎসা হচ্ছে। কোনো একটি নির্দিষ্ট ওষুধ সব রোগীর জন্য ভালো নয়। প্রত্যেক রোগীর জন্য তার স্কিন টাইপ, ব্রণের ধরন, ব্রণের কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উত্তম। আক্রান্ত স্থানে লাগানো ভিটামিন-এ জাতীয় ক্রিম সাধারণত সহনশীল ও ভালো। সাধারণ ওষুধ ব্যবহারের এক মাসের মধ্যে এর ফল দেখতে পাওয়া যাবে।

বর্তমানে কেমিক্যাল পিলিং মাইক্রোড্রামএব্রাসন এবং কমেডো এক্সট্রাকসন ব্রণের অত্যাধুনিক চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ব্রণ আক্রান্ত রোগীর ব্রণ সম্পর্কে সাময়িক ধারণা থাকা আবশ্যক। ব্রণ সাধারণত লোমকূপ ও তার সঙ্গে অবস্থিত তেলগ্রন্থির মুখের প্রদাহের জন্য হয়। ব্রণের প্রাথমিক ক্ষত হচ্ছে কমেডন, যা দুধরনের।

এদের মধ্যে অগভীর কমেডনগুলো বাইরে থেকে কালো দেখা যায়। এর নাম ব্লাক হেড। গভীর কমেডনগুলো বাইরে থেকে সাদা দেখা যায়। নাম হোয়াইটহেড। এ ছাড়া ছোট দানা, বড় দানা, পুঁজসহ দানা থাকতে পারে। ব্রণ সাধারণত মুখ, গলা, বুক, পিঠ ও বাহুতে হয়।

প্রতিকারের উপায় : ব্রণ থেকে মুক্ত বা ব্রণে আক্রান্তকারী যেসব বিষয় অনুসরণ করতে পারেন তা হলো-ব্রণ খুটা বা চিমটানো যাবে না। ছাতা বা ক্যাপ ছাড়া রোদে বের হওয়া যাবে না। মুখে যে কোনো ধরনের কসমেটিক ব্যবহার করা যাবে না। টেনশনমুক্ত থাকতে হবে। খুব বেশি সাবান বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যাবে না। চুলে বেশি তেল ব্যবহার করা যাবে না। চুলে হেয়ারজেল বেশি ব্যবহার করা যাবে না।

ব্রণ আক্রান্ত রোগীর সাবধানতা : ব্রণ খুঁটলে নখের জীবাণুর মাধ্যমে ক্ষতস্থানে ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন হয়ে স্থায়ী দাগ ও গর্ত হতে পারে। তাই নখ দিয়ে খুঁটা উচিত নয়। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের চেয়ে বেশিবার ওষুধ ব্যবহার ব্রণ দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে না; বরং বেশি করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললে চিকিৎসার পর বেশি ব্রণ ওঠার কথা নয়। তবু যদি নতুন করে ব্রণ ওঠে, তা হলে আবার নতুন করে চিকিৎসা নিতে হবে।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চেম্বার : কামাল স্কিন সেন্টার গ্রিন রোড, ঢাকা।

আপনি আরও পড়তে পারেন