ছেলেধরা সন্দেহে আটকিয়ে চরম বিপদে আছে বাগমারা পুলিশ

 রাজশাহী ব্যুরো ডাঃ মোঃ হাফিজুর রহমান (পান্না)

ছেলেধরা সন্দেহে এলাকাবসীর হাতে আটক এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসে বিপাকে পড়েছে রাজশাহীর বাগমারা থানার পুলিশ। পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় তাঁকে পরিবারের কাছে পৌচ্ছানো সম্ভব হয়নি। মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় কোনো সেফহোমেও পাঠানো যাচ্ছে না পুলিশ। নিরুপায় হয়ে প্রায় ২০ দিন ধরে পুলিশ হেফাজতে হয়েছে ওই ব্যক্তি। বাগমারা থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ জুলাই রাতে উপজেলার দ্বীপনগর এলাকা থেকে ৬৩ বছরের এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে পুলিশ উদ্ধার করে। তিনি ওই এলাকায় সন্দেহ জনকভাবে ঘোরাফেরা করলে এলাকাসাবীর ছেলেধরা বলে সন্দেহ হয়। পরে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। একই দিনে উপজেলার শিকদারী ও দেউলা এলাকা থেকে আরও দুজন মানসিক প্রতিবন্ধীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদেরকেও ছেলেধরা সন্দেহে এলাকাবাসী ধরে রেখেছিল। তাঁদের পুলিশ হেফাজতে রেখে পরিচয় উদ্ধার করে। এর মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়ার পর তাঁদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে জটিলতার সৃষ্টি হয় দ্বীপনগর এলাকা থেকে উদ্ধার করা ওই মানসিক প্রতিবন্ধীকে নিয়ে। বাগমারা থানার পুলিশ আরো জানায়, এই মানসিক প্রতিবন্ধী নিজের কোনো ঠিকানা বলতে পারছেন না। সব সময় অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন ও চিৎকার করছেন। সিলেটের অথবা কুমিল্লার আঞ্চলিক ভাষায় মাঝে মধ্যে কথাবার্তা বললেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না তা কোন এলাকার ভাষা। তাঁর পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় থানাতেই পুলিশ হেফাজতে রয়েছে প্রায় ২০ দিন ধরে। থানায় রেখে তাঁর দেখভাল করতে হচ্ছে পুলিশকে। থানার পুুলিশের উদ্যোগে চিকিৎসাসহ সব ধরনের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে । নাম প্রকাশ না করার শর্তে থানার একাধিক কর্মকর্তা বলেন, তিন দিন আগে ওই ব্যক্তি অসুস্থ হলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখান থেকে পালিয়ে যান তিনি। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে তালতলি বাজার থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশ তাঁকে ছাড়তেও পারছে না, রাখতেও পারছে না। থানায় থাকতেও চাইছেন না তিনি। তাঁকে নিয়ে পুলিশ খুব বিপদে আছে। বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, থানার কর্মকর্তারা ওই প্রতিবন্ধীকে পর্যায়ক্রমে খাওয়াচ্ছেন ও দেখাশুনা করছেন। আদালতের নিন্দেশে সম্প্রতি তাঁকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর পুনরায় থানায় পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে তাঁকে সেফহোমেও পাঠানো যাচ্ছে না। তাঁকে নিয়ে থানার পুলিশ রীতিমতো বিপাকে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আপনি আরও পড়তে পারেন