নজরদারীর অভাবে মেঘুলা হাট-বাজারের সরকারি জমি বেদখ হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দোহার উপজেলার অন্যতম দ্বিতীয় বাজার ’মেঘুলা’ হাট- বাজারের সরকারি সম্পত্তি নজরদারীর অভাবে বেদখল হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। জানা যায়,পদ্মা নদী সংলগ্ন উপজেলার প্রাচীন অন্যতম দ্বিতীয় বাজার ’মেঘুলা’ হাট-বাজারের পরিচিতি ছিল আগে থেকেই।নৌপথের সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন পাইকারি মোকাম থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা ভীড় জমাতো হাটের দিনে। একসময় পদ্মা নদীর শাখা খালটি দিয়ে,উত্তর শিমুলিয়ার আড়িয়ল বিল হয়ে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে লোকজন নৌপথে যাতায়াত করতো এবং বিভিন্ন কৃষি পণ্য সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য আনা নেয়া করা হতো এই হাটে। পদ্মা সংযুক্ত খালটিতে সারা বছর পানি থাকায় প্রচুর দেশীয় মাছও পেতো জেলেরা। আড়িয়াল বিলে নদীর পানির সাথে সাথে পলি মাটি গিয়ে জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পেত এবং ফসলও ভালো হতো। কালের বির্বতনে আজ তা স্বপ্নের ও স্মৃতির মাঝেই সীমাবদ্ধ। পদ্মা নদীর শাখা খালটির মেঘুলা অংশ ভরাটের ফলে জেগে উঠা জমি দখল হয়ে গেছে আগে থেকেই।যেটুকু রয়েছে তা ’মেঘুলা’ হাট-বাজারের সরকারি সম্পত্তি!তাও নজরদারীর অভাবে বেদখল হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।মেঘুলা’ হাট- বাজারের সরকারি সম্পত্তিতে গড়ে উঠেছে পাচঁতলা,দোতলাসহ একাধিক বানিজ্যিক দোকান-পাঠ।এছাড়াও হাট-বাজার সংলগ্ন পদ্মা নদীর শাখা খাল ভরাট করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল বহুতলা ভবন,মার্কেট ও দোকান নির্মাণ করে দেদারসে ব্যবসা বাণিজ্য করে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী দেলোয়ার শিকদার গং,তালেব মোড়ল গং,শাহজাহান খালাসী,আবুল হাওলাদার,মেঘুলা হাট-বাজার কমিঠি গং সহ একাধিক রাজনৈতিক পরিচয়ে ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবৎ মেঘুলা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর শাখা খাল ভরাট ও দখল করে পাকা ভবন, দোকানপাঠ করে বিভিন্ন ব্যবসা এবং দোকান ভাড়া আদায় করে আসছে।অনুসন্ধানীতে আরও জানা যায়,দখলদাররা দখলের প্রথম দিকে টিনের ঘর নির্মাণ করলেও কেউ কেউ সময়ের সাথে সাথে তারা সেই স্থানে পাকা ভবন ও মার্কেট নির্মাণ করেছেন।এ বিষয়ে পূর্বে একাধিকবার উপজেলা ভূমি অফিস থেকে দখলীয় এলাকা পরিদর্শন করলেও কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে জানান স্থানীয়রা।এ ঘটনায় দখলদাররা সরকার কর্তৃক তাদের দখলকৃত জমি বরাদ্ধ হয়েছে বলে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যায়। এ বিষয়ে অনুসন্ধানীতে উপজেলা ভুমি অফিস কতৃক জানা যায়, মেঘুলা হাট- বাজারের অস্থায়ী গরুর হাটের সাথে পাচঁতলা পাকা ভবনের মালিক দেলোয়ার সিকদার সরকারী জমিতে আবেদন না করেই জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করেছেন বলে জানান। এ বিষয়ে মেঘুলা’ হাট-বাজারের ইজারাদার তালিব মোড়ল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ইজারাদারের শর্তাদি মেনেই হাট-বাজার পরিচালনা করে আসছেন! কোন অবৈধ দখলদার নেই। এ বিষয়ে খাল দখল করে বহুতলা ভবনের মালিক দেলোয়ার সিকদারের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আমি আশির দশকে মৃত- রমনী মোহন সাহার ছেলে ভেবলা সাহা, বলরাম সাহা ও রতন সাহার কাছ থেকে মেঘুলা বাজার সংলগ্ন এ জায়গা ক্রয় করি। ভবন নির্মাণের সময়ে আমি দেশে ছিলাম না। আমার এক আত্মীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ তার তত্তা¦বধায়নেই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মেঘুলা বাজার কমিটির সভাপতি কাজি রুবেল জানান,উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে বাৎসরিক চুক্তিতে জমি বরাদ্ধ নিয়ে মেঘুলা হাট-বাজার পরিচালনা করা হচ্ছে। উক্ত জায়গায় অনেকে ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছে।এছাড়াও এখানে অনেকেই খালের জমি দখল করে বর্তমানে দোকান-ঘর ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে নারিশা ইউপি চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ- সভাপতি সালাউদ্দিন দরানী বলেন, খালের জমি দখল করে ভবন নির্মাণের কথা শুনেছি। তবে কাগজ-পত্র দেখলে বিষয়টি সম্পর্কে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এ বিষয়ে উপজেরা সহকারি কমিশনার(ভুমি) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন,আমি সদ্য যোগদান করেছি।বিষয়টি আমার জানা ছিলো না।খোজঁ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আলমহীর হোসেন বলেন,কোন অবৈধ দখলদারকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে কাগজ-পত্র সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ যাচাই- বাছাই করে দেখলে বিষয়টি সম্পর্কে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে এবং এর প্রতিকারও হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন