দোহারে মাদকাসক্তের ছুড়ির আঘাতে ডান চোখ হারালো অটোচালক! || দেড় বছরে বিচার পেল না।

মাহবুবুর রহমান টিপু, নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকার দোহার উপজেলায় এক মাদকাসক্তের ছুড়ির আঘাতে এক অটোচালকের ডান চোখ অন্ধ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ জানান ভুক্তভোগী মিজানুরের(৩৫)পরিবার।এ ঘটনায় মিজানুর ও তার পরিবার দেড় বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে দোহার থানা পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও কোন প্রতিকার পান নি বলে জানান।অন্ধ মিজানুর উপজেলার মধুরখোলা পল্লীবাজার এলাকার বাসিন্ধা।

অভিযোগকারী জানান, ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মধুরখোলা এলাকায় রুইথ্যা গ্রামের নুরু প্রমানিকের ছেলে মাদকাসক্ত ও ছিনতাইকারী দলের নেতা বাদল তার দলবল নিয়ে মিজানুরের অটোগাড়িতে জোরপূর্বক উঠে বসে। ছিনতাইকারী দলের ইচ্ছামত এলাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বললে মিজানুর রাজি না হওয়াতে ক্ষিপ্ত হন মাদকাসক্ত বাদল।এক পর্যায়ে বাদল তার কোমর থেকে লুকানো ছোড়া বের করে মিজানুরের ডান চোখ লক্ষ করে আঘাত করে।এ ঘটনায় চালক মিজানুর ডার্কচিৎকার দিলে ছিনতাইকারীদল দৌড়ে পালিয়ে যায়।রাতেই স্থানীয়রা আহত মিজানুরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরন করেন।পরবর্তীতে চিকিৎসা শেষে ডান চোখ হারানো মিজানুর বাড়িতে এসে শাইনপুকুর তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ জানান।অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযুক্ত মাদকাসক্ত ও ছিনতাইকারী দলের নেতা বাদলকে আটক করলেও প্রভাবশালীদের চাপে উভয়পক্ষকে আপোষ-মিমাংসা করে দিবে বলে মাতব্বররা জানান।এ ঘটনার বছর পার হয়ে গেলেও মাতব্বররা আর ক্ষতিপূরন দেন নি মিজানুরকে। পরবর্তীতে দোহার থানায় একাধিকবার অভিযোগ করলেও পুলিশ বিষয়টি আমলে নেন নি বলে জানান অন্ধ মিজানুর ও তার পরিবার।বর্তমানে ডান চোখ হারানো মিজানুর তার পরিবার নিয়ে আতংকে রয়েছেন।
এ বিষয়ে মিজানুরের মা লাইলি বেগম জানান,গত পনের দিন আগে সাইনপুকুর তদন্ত কেন্দ্রের এস আই সায়মন সাহেব কুখ্যাত বাদলকে আটক করলেও রাত্রেই আবার ছেড়ে দেয়।

এ বিষয়ে রুইথ্যা গ্রামের মফিজ মিয়া,হালিম,তপন মোল্লা,খালেদা ও সাবিনা বেগম জানান,বাদল একজন মাদকাসক্ত ও ছিনতাই-চোর দলের সদস্য।স্থানীয় চেয়ারম্যান এম.এ হান্নান সাহেব সবই জানেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এম.এ হান্নান জানান,আমি এ পর্যন্ত দশ বার বিচারের চেষ্টা করেছি।কিন্ত মাদকাসক্ত বাদল ও তার পরিবার বিচারে হাজির হন নাই।বিষয়টি সাইনপুকুর তদন্ত কেন্দ্রে জানিয়েছি,পুলিশও কয়েকবার বাদলকে আটক করেছেন আবার ছেড়েও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাইনপুকুর তদন্ত কেন্দ্রের এস আই সায়মন মাদকাসক্ত বাদলকে আটকের কথা স্বীকার করে জানান,বাদলকে আটকের পর মাদকাসক্ত থাকায় তার শরীরের অবস্থা অবনতি হতে থাকলে তার পরিবারের জিম্বায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।পরবর্তীতে বাদল আর হাজির হয় নাই।
এ বিষয়ে দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.সাজ্জাদ হোসেন জানান,মিজানুরের ঘটনায় থানায় কোন মামলা রেকর্ড না থাকাতে এবং ঘটনাটি অনেক আগের হওয়ায় আমরা কোন আইনি ব্যবস্থা নিতে পারি নাই।তবে অভিযুক্ত বাদল মাদকাসক্ত হলে মাদক মামলায় তাকে আটক করা যেতে পারে।

আপনি আরও পড়তে পারেন