কিশোরী সাঁতারুকে যৌন হেনস্থাকারী সেই প্রশিক্ষক গ্রেপ্তার

ভারতে রিষড়ার কিশোরী সাঁতারুকে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত প্রশিক্ষক সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিল্লির কাশ্মীরি গেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই কিশোরী সাঁতারু জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন।

ভারতীয় গণমাধ্যম জিনিউজের খবরে বলা হয়েছে, কিশোরী সাঁতারুকে হেনস্থার ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর গত বৃহস্পতিবার মামলা করে গোয়া পুলিশ। ওদিকে ভিডিও প্রকাশের পর থেকেই ফেরার ছিলেন সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রথমে নির্যাতিতা সাঁতারু ও তার বাবা রিষড়া থানার দ্বারস্থ হন। গোয়ার মাপুসা থানার অন্তর্গত এলাকায় ওই হেনস্থার ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেন তারা।

পরে রিষড়া থানা থেকে গোয়ার মাপুসা থানায় ই-মেইলে সেই অভিযোগ পৌঁছতেই সেখানে দায়ের হয় এফআইআর। সঙ্গে সঙ্গে সুরজিতের খোঁজে মাঠে নামে উত্তর গোয়া পুলিশ। পরে তার ফোনের ওপর নজরদারি শুরু করেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারি এড়াতে একাধিক শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন সুরজিৎ। তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ ও পকশো আইনে মামলা রুজু করে তল্লাশিতে নামে পুলিশ। অবশেষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মেলে সাফল্য। দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার হয় সুরজিৎ।

এদিকে এই কোচের বিরুদ্ধে বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে জাতীয় সাঁতার সংস্থা। গোয়া রাজ্য সাঁতার দলের কোচ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সুরজিৎ। এবার তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি গোটা দেশে আর কোথাও সাঁতার কোচ হিসেবে থাকতে পারবেন না তিনি।

সুইমিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া-র তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‌‘গোয়া ইউনিটের রিপোর্ট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার হওয়া ভিডিও’র নিরিখে কোচ সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বরখাস্ত করা হলো। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। গোটা দেশের আর কোনো রাজ্যে কোচিংয়ের দায়িত্ব সামলাতে পারবেন না সুরজিৎ। ২৯টি রাজ্যের ক্ষেত্রেই এই নিয়ম বলবৎ থাকবে।’

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৩৫৪ (নিগ্রহ), এবং ৫০৬ (অপরাধ প্রবৃত্তি) ছাড়াও পসকো এবং গোয়ার শিশু অধিকার সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সুরজিতের বিরুদ্ধে।

ঘটনার তীব্র নিন্দা করে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু আগেই জানিয়েছিলেন, কোচের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। ক্রীড়ামন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পরই জাতীয় সাঁতার সংস্থা এমন বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল।

উল্লেখ্য, কিশোরী সাঁতারু দীর্ঘ ছয় মাস ধরে তার কোচের কাছে যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছিলেন। অবশেষে কোচের যৌন হেনস্থার বিষয়টি ভিডিও ধারণ করে গত বৃহস্পতিবার তা সামনে আনেন এ সাঁতারু। গোপনে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে সহায়তা চান অভিযোগকারী ওই কিশোরী। সঙ্গে সঙ্গে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।

আপনি আরও পড়তে পারেন