সিংগাইরে পাতাসহ পেঁয়াজের কেজি ৬০ টাকা

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আগাম জাতের পেঁয়াজ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে চাষীরা। এই অঞ্চলের কৃষকদের আবাদকৃত পেয়াঁজ স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন বাজারে। ভাল দাম পাওয়ায় অপরিপক্ক পেঁয়াজ উঠিয়েই বাজারে বিক্রি করছে চাষীরা। তবে, কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন অপরিপক্ক হলেও এসব পেঁয়াজের খাদ্যমান ভাল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে যখন পেয়াঁজ নিয়ে অস্থিরতা চলছে, তখনি সিংগাইরে বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন পেঁয়াজ। পুরাতন পেয়াঁজ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও স্থানীয় পেঁয়াজ পাতাসহ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। ভাল দাম পাওয়ায় চাষীরা অপরিপক্ক পেঁয়াজই বাজারে বিক্রি করছেন। বিঘাপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে স্থানীয় চাষীরা প্রায় ৪০/ ৪৫ হাজার টাকা লাভ করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলার কয়েকটি গ্রামে আগাম জাতের পেয়াঁজের আবাদ করা হয়েছে। এই অঞ্চলে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫০ হেক্টর। ইতিমধ্যে প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।

উপজেলার কাংশার চর গ্রামের চাষী ওয়াহাব জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। আশ্বিন মাসে তিনি এই পেঁয়াজ রোপন করেছেন। জমি তৈরি, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ সব মিলিয়ে বিঘা প্রতি জমিতে খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। গত দুই সপ্তাহ ধরে তিনি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে এই মৌসুমে তিনি প্রায় ৪০/৪৫ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন।

নয়াডাঙ্গী গ্রামের কৃষক কেরামত আলী জানান, এ বছর এক বিঘা জমিতে তিনি পেঁয়াজের চাষ করেছিলেন। বাজারে ভালো দাম থাকায় এবার আগে ভাগেই ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলছেন তিনি। অর্ধেক জমির পেঁয়াজ প্রায় ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। পেঁয়াজের ভালো দামে তিনি বেশ খুশি।

একই গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পুরাতন পেঁয়াজের দাম চড়া হলেও তাদের আবাদকৃত পেঁয়াজ বাজারে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে পাতাসহ এই পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এই পেঁয়াজটি অপরিপক্ক। এই এলাকার পেঁয়াজ আরো ২০/২৫ দিন পরে উঠানোর কথা ছিল। কিন্তু বাজারে ভাল দাম থাকায় তারা অপরিপক্ক পেঁয়াজই বিক্রি করছেন।

আজিমপুর গ্রামের কৃষক জুনাব আলী জানান, মানিকগঞ্জের অন্যান্য উপজেলার চাইতে সিংগাইর এলাকা অনেকটাই উচু। বন্যার পানি দেরিতে নামায় ওইসব এলাকায় এখন পেঁয়াজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। আমাদের এখানে পেঁয়াজ ইতিমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে।

জয়মন্টপ সবজি বাজারের ব্যবসায়ী জয়নাল মিয়া জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা পাতাসহ পেঁয়াজ এই বাজারে নিয়ে আসেন। এখান থেকে এসব পেঁয়াজ ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।

সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতান স্বপন জানান, অস্থির বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের জোগান এটা ভালো একটা দিক। মানুষ কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন। তাছাড়া পাতা পেঁয়াজ ওঠানোর পর কৃষকরা সেই জমিতে পুনরায় পেঁয়াজ চাষ করবেন। তাই পেঁয়াজ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না।

আপনি আরও পড়তে পারেন