বীমার টাকা পেতে লাশ নিয়ে অফিসে!

পরিবারের সদস্যের মৃত্যুর পর বীমার টাকা পেতে ব্যাপক হয়রানি করা হচ্ছিল। বিরক্ত হয়ে চাচার মরদেহ নিয়ে বিমার অফিসে হাজির হয়েছেন দুই ভাতিজি। দক্ষিণ আফ্রিকার নাটাল প্রদেশে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে যেখানে বীমা প্রতিষ্ঠানের সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জানা গেছে- বীমাকারীর নাম সিফিসো জাস্টিস মহালোঙ্গ। চলতি সপ্তাহে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর। সিফিসো মারা যাবার পর তার স্ত্রী মিস মহালোঙ্গ বীমা কোম্পানি ওল্ড মিউচুয়ালের কাছে বীমার টাকা দাবি করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তার কথায় কর্ণপাত না করে উল্টো তাকে সিফিসোর মৃত্যুর প্রমাণ দিতে বলে।

বীমার কথা জানতেন তার পরিবারের সদস্যরা। সে কারণে চাচার মৃত্যুর পর টাকা পেতে বীমা কোম্পানির স্থানীয় অফিসে যান সিফিসোর দুই ভাতিজি নটম্বেনহেল মহলংগো ও থানদাজা মাতশালি। চাচার মৃত্যুর চারদিন পর ১১ নভেম্বর ওল্ড মিউচুয়ালের অফিসে গিয়ে সিফিসোর দুই ভাতিজিকে শুনতে হয় ‘৪৮ ঘণ্টা পর আসুন’।

সে অনুসারে তারা ১৪ নভেম্বর আবার সেখানে যান। কিন্তু তাদের আবার বলা হয়, ‘পরের দিন আসুন’। পরের দিন আবার বলা হয় ‘তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করুন’। এবার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় তাদের। তারা সিদ্ধান্ত নেন, চাচার মরদেহ নিয়ে আসবেন ওল্ড মিউচুয়ালের অফিসে। দেখাবেন, চাচা সত্যিই মারা গেছেন। সে অনুসারে তারা গাড়িতে করে মরদেহ নিয়ে পৌঁছে যান ওই অফিসে।

এতদিন ধরে বীমা অফিসের যে কর্মীরা গড়িমসি করছিলেন, তারা বুঝতে পারেন পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে যাচ্ছে। সে কারণে তারা আর ঝুঁকি নেননি। বীমার টাকা মিটিয়ে দেন। বিমার টাকা ও চাচার মরদেহ নিয়ে দুই ভাতিজি বাড়ি ফিরে যায়।

মূহূর্তের মধ্যে এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার মানুষ ভিডিওটি শেয়ার করে। কমেন্ট লিংকে অনেকে ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায়।

তবে বীমা কোম্পানির দাবি তারা সিফিসোর স্ত্রীকে মৃতদেহ আনতে বলেনি। তারা শুধু বলেছে, কিছু তথ্য-উপাত্তে সমস্যা হচ্ছে। সেগুলো ঠিক করতে হবে।

কিন্তু সিফিসোর স্ত্রী বলছেন- এটা মিথ্যা কথা। যথাযথ প্রমাণ উপস্থিত করা সত্ত্বেও বীমা কোম্পানি কোনোভাবেই বিশ্বাস করছিল না আমার স্বামী মারা গেছে। ফলে বাধ্য হয়েই তার মৃতদেহ আমাকে হাজির করতে হয়েছে। অথচ আমি এটা করতে চাইনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনা ভাইরাল হলে বিপদে পড়ে যায় ওল্ড মিউচুয়াল। তারা দ্রুত দাবি মেনে নিয়ে টুইট করে- বীমার লভ্যাংশ ১৭০০ ডলার দিয়ে দেয়া হয়েছে। এই অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।

 

 

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন