আদালতের সিদ্ধান্তে পুরো জাতি আজ শুধু হতাশই হয়নি, চরম বিক্ষুব্ধ হয়েছে: ফখরুল

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন না হাওয়ায় জাতি আজ বিক্ষুব্ধ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, আপনারা সবাই জানেন আজ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি ছিল কিন্তু তার প্রাপ্য জামিন আজও তিনি পেলেন না। বিএসএমএমইউ’র ভাইস চ্যান্সেলরকে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি নিয়ে একটি রিপোর্ট আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ শুনানির দিনেও সেটা দেয়া হয়নি।

আর অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদনের সঙ্গে সঙ্গেই কোর্ট শুনানির জন্য আরও এক সপ্তাহ সময় বাড়িয়ে দিয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্তে পুরো জাতি আজ শুধু হতাশই হয়নি, চরম বিক্ষুব্ধ হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে জামিন না দিয়ে তার উপর অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, মিথ্যা মামলায় যখন খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছিল, তখন থেকে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়া দরকার সেটাও তাকে দেয়া হচ্ছে না।

মামলার যে প্রচলিত নিয়ম সে নিয়ম অনুযায়ী তিনি সাত দিনের মধ্যে জামিন পাওয়ার কথা। কিন্তু আজ বিশ মাস হয়ে যাওয়ার পরও তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। তার সঙ্গে একটা সাধারণ নাগরিকের মতোও আচরণ করা হচ্ছে না। উল্টো তার ওপর অন্যায়, অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছে।

বিএসএমএমইউ’র মেডিকেল বোর্ড আদালতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার রিপোর্ট জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত অবমাননা হয়েছে বলে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আজ বিএসএমএমইউর ভাইস চ্যান্সেলর আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ মেডিকেল রিপোর্ট দাখিল করার কথা ছিল।

গত ৩০ শে ডিসেম্বর নতুন একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। চারজন চিকিৎসকের সমন্বয় এ বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। আজ সে রিপোর্ট দেয়ারও কথা ছিল। কিন্তু মেডিকেল বোর্ড এ রিপোর্ট আদালতে দাখিল করতে ব্যর্থ হয় আমরা মনে করি তারা আদালত অবমাননা করেছে।

সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপে খালেদা জিয়ার জামিনে বাধা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যতটুকু জানি গতকাল রাতেই মেডিকেল বোর্ড চূড়ান্ত হয়েছিল। আর সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ আজ তার জামিনে বাধা দেয়া হয়েছে।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিয়ে বিচার বিভাগ এবং মেডিকেল বোর্ডের প্রতি একটা ভয়-ভীতি দেখিয়েছেন বলে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, তার কথায় সরাসরি বোঝা যায় তিনি বেগম খালেদা জিয়ার মামলার বিচার চলাকালীন সময়ে সরাসরি বিচারে হস্তক্ষেপ করছেন।

তিনি দেশের প্রধান নির্বাহী হয়ে যেমন বক্তব্য দিচ্ছেন এটা আমরা মনে করি বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ শামিল আর আদালত অবমাননার শামিল। তার এসব বক্তব্য পরিষ্কার যে তিনি এবং তার সরকার চান না খালেদা জিয়া মুক্ত হন।

এই মুক্তি চাওয়া কোন করুণার ব্যাপার না। এটা তার আইনগত প্রাপ্য। তাকে একমাত্র রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্যই এ কাজগুলো করা হচ্ছে।

যেটা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আদালত অবমাননার শামিল। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন বেগম খালেদা জিয়া রাজার হালে আছেন। তার এসব বক্তব্যের বোঝা যায় তিনি মেডিকেল বোর্ড এবং বিচারবিভাগকে ভয় দেখিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

আপনি আরও পড়তে পারেন