চট্রগ্রামে তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের পাচঁ তারকা হোটেল’পেনিনসুলা এয়ারপোর্ট গার্ডেন’।

চট্রগ্রামে তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের পাচঁ তারকা হোটেল’পেনিনসুলা এয়ারপোর্ট গার্ডেন’।

মোঃজিপন উদ্দিন,চট্রগ্রাম।

দেশি-বিদেশী পর্যটক ও যাত্রীদের ২০ কিলোমিটারের ঝামেলা থেকে রেহাই দিতে মহান স্বাধীনতার পর এই প্রথম চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের পাশেই তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের পাঁচ তারকা হোটেল ‘পেনিনসুলা এয়ারপোর্ট গার্ডেন’। নির্মিতব্য এ হোটেলটিতে থাকছে অত্যাধুনিক নানা সুবিধার সঙ্গে থাকছে আধুনিক মানববর্জ্য শোধনাগার প্ল্যান্ট। তিন কোটি টাকা ব্যয়ে মানববর্জ্য শোধন করে তা হোটেলের কমোড ফ্ল্যাশ, গার্ডেনসহ আনুষঙ্গিক নানা কাজে ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যে ১২ তলা হোটেলটির ১০ তলা পর্যন্ত স্ট্রাকচার কাজ শেষ হয়েছে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭২ সালে। ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বীকৃতি অর্জন করে এটি। এখন শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে বছরে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ দেশি-বিদেশী যাত্রী ও পর্যটক চট্টগ্রামে আসা-যাওয়া করছেন। প্রতি বছরই বাড়ছে সেই সংখ্যা। কিন্তু শাহ আমানতের আশপাশে দেশি- বিদেশী যাত্রী কিংবা পর্যটকদের থাকা ও খাওয়ার জন্য নেই কোন আধুনিক হোটেলের সুবিধা। বাধ্য হয়েই পর্যটক কিংবা বিদেশীদের বিমানবন্দর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে নগরীর জিইসি ও কাজীর দেউড়িতে তিন তারকা ও পাঁচ তারকা হোটেলে রাত্রিযাপন ও খাওয়া-দাওয়া করতে হচ্ছে। জানা যায়, পতেঙ্গা নেভাল রোডের পাশে তথা কর্ণফুলী টানেলের পাশেই তৈরি হচ্ছে হোটেল ‘পেনিনসুলা এয়ারপোর্ট গার্ডেন’। হোটেল থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে শাহ আমানত বিমানবন্দর। হোটেলের তিন দিকে রয়েছে দেশের তিনটি আকর্ষণীয় পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র। হোটেলটির পূর্ব দিকে আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকত, উত্তরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং পূর্ব-উত্তরে রয়েছে নেভাল একাডেমি। এয়ারপোর্ট গার্ডেন হোটেলটির হিলটপ থেকে একসঙ্গেই নেভাল একাডেমি, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের সকাল, দুপুর ও রাতের তিন সময়ের তিন রূপ ও সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। হোটেলটির অন্যতম উদ্যোক্তা হোটেল পেনিনসুলার সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের পাশে এক বা একাধিক তারকামানের হোটেল রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর এতো বছর কেটে গেলেও চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের আশপাশে কোন তারকা হোটেল ছিল না। শাহ আমানত থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পর্যটক ও বিদেশীদের হোটেল সুবিধা নিতে হতো। তাই পেনিনসুলা কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ চেষ্টার পর শাহ আমানতের পাশে ১২ তলা একটি পাঁচ তারকা মানের হোটেল নির্মাণ করছে। যা পৃথিবীতে বৃহত্তর চট্টগ্রামের পর্যটনকে ব্রান্ডিং করবে। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, হোটেলটিতে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক মানের স্বয়ংক্রিয় মানববর্জ্য শোধানাগার প্ল্যাটও তৈরি করা হচ্ছে। সিঙ্গাপুরের আদলে এই শোধানাগার তৈরি করা হচ্ছে। যা চট্টগ্রামের জন্য একটি নতুন কনসেপ্ট। মানুষের বর্জ্যকে আমরা সম্পদে পরিণত করবো। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে ‘পেনিনসুলা এয়ারপোর্ট গার্ডেন’ নামে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২০৮ কোটি টাকা। ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। ইতিমধ্যে ১২ তলা হোটেলটির ১০ তলা পর্যন্ত ভৌত অবকাঠামো তথা স্ট্রাকচার তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। সরকার থেকে লিজ নেওয়া দুই দশমিক ১৫ একর জায়গার ওপর হোটেলটি নির্মাণ করা হচ্ছে। হোটেল পেনিনসুলা প্রাইভেট লিমিটেডের কোম্পানি সেক্রেটারি মো. নূরুল আজিম জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সেন্টমার্টিন, চট্টগ্রাম, পাবর্ত্য চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলো দেখতে প্রতি বছরই বিদেশী পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে চট্টগ্রামকেন্দ্রিক বহুজাতিক কোম্পানি, মিরসরাই ইকোনমিক জোনেও বিদেশীর সংখ্যা বাড়ছে। এসব কিছু মাথায় রেখেই শাহ আমানতের পাশে হোটেলটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া শাহ আমানত বিমানবন্দর ব্যবহারকারী দেশী-বিদেশী যাত্রীরাও ট্রানজিট কিংবা রিফ্রেশ হওয়ার সুযোগ পাবে এ হোটেল থেকে।

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন