আমার দেশে কি কোনো ভালো শিল্পী নেই, প্রশ্ন আলালের

বঙ্গবন্ধু বিপিএল-এর উদ্বোধনীয় অনুষ্ঠানে বিদেশি শিল্পীদের নাচ-গানের সমালোচনা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘গতকাল বিবিপিএলে যা হয়েছে আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র, কৃষ্টি-কালচার এবং সংস্কৃতির সঙ্গে কোনো মিল নেই। আমাদের শিল্পীরা কখনো এ অবস্থায় নাচে? এ অবস্থা আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করছে। ভারত থেকে সালমান-ক্যাটরিনা অন্যান্য শিল্পীদের নিয়ে এসে অনুষ্ঠান করছে কেন? আমার দেশে কি কোনো ভালো শিল্পী নেই? জেমস, মনির খান, সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, আছে, তারা তো উলঙ্গ হয়ে নাচবে না। এ আওয়ামী লীগ সরকার অন্য দেশ থেকে এসব শিল্পী এনে উলঙ্গভাবে নাচিয়ে আমাদের নারী শিশু অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে।’

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘আর কতকাল বন্দী থাকবে খালেদা জিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধারা পর্যন্ত ধর্ষিত হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় কোনো কন্যা শিশুকে ধর্ষণ করেনি। কিন্তু শেখ হাসিনার বাহিনী একের পর এক শিশু ধর্ষণ করে যাচ্ছে বাংলাদেশে। আড়াই বছরের শিশু থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধ মায়ের বয়সী মহিলাকে ধর্ষণ করে যাচ্ছে তারা।’

আলাল বলেন, ‘এ শেখ হাসিনার আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহারে ছাত্রীদেরকে নির্যাতন করা হয়েছিল। তখন ভি‌সি ছিলেন- আরেফিন সিদ্দিকী তিনি বলেছিলেন, সব ভিডিও করা আছে এর সঠিক বিচার হবে। কিন্তু এর বিচার কি হয়েছে? হয় নাই। ৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছিল আওয়ামী লীগ। সেদিন আওয়ামী লীগের বাহিনী দ্বারা কলেজের, স্কুলের ছাত্রীরা যৌন হয়রানি হয়েছিল। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন এর সঠিক বিচার হবে। বিচার কি হয়েছে? হয় নাই।’

তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ পদে যদি চোর, বাটপার, খুনি এবং ধর্ষকরা বসে থাকে তাহলে দেশের কী হবে? ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা কী জবাব দেব?’

সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘শুধু খালেদ, জিকে শামীম, সম্রাটকে গ্রেফতার করলেই দেশে দুর্নীতি শেষ হবে না, এটা একটা আই-ওয়াশ মাত্র। সমুদ্রের সব পানি যদি দূষিত হয়, তাহলে সেখান থেকে কয়েক বালতি পানি ওঠালে সব পানি বিশুদ্ধ হয় না। তেমনি দেশের ক্ষমতাধররা সবাই দুর্নীতিবাজ। ফলে সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেই দেশে দুর্নীতি কমে আসে না।’

‘দেশের যেকোনো পরিবর্তনের জন্য খালেদা জিয়ার একটি ইঙ্গিতই যথেষ্ট’ মন্তব্য করে আলাল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার সে ইঙ্গিতটা এখনো পাচ্ছি না। যেদিন পাব সেদিন আমরা যারা মাঠ পর্যায়ের কর্মী তারা ঘরে বসে থাকব না।’

এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা তো রাতে ঘুমাচ্ছি, একবারও কি মনে করছি যে, খালেদা জিয়া ঘুমাতে পারছে কি না। এই কষ্টটা শুধু বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে নয় সারা দেশের মানুষের মনের মধ্যে। সে কষ্টটা নিয়ে বিএনপি কর্মসূচি দেওয়ার জন্য কতটা সংকল্পবদ্ধ, কতটা লোক দেখানো কর্মসূচি? এ প্রশ্নটা আমার মনের মধ্যে জাগে। এর জন্য যদি আমাকে বহিষ্কার করা হয়, আমি খুশি। তারপরেও আমার মনে প্রশ্ন থেকে যাবে- হোয়াট দ্য হেল উই আর গোয়িং।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।

আপনি আরও পড়তে পারেন