খালেদার জামিন শুনানি : নিরাপত্তার বলয়ে সুপ্রিম কোর্ট

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তা।

এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির এজলাসে বিক্ষোভ ও হট্টগোল করেন। ফলে ওইদিন আপিল বিভাগের নিয়মিত কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

আগামীকাল বৃহস্পতিবারও (১২ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামিনের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

গত ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে আপিল বিভাগের এ আদালতে ‘নজিরবিহীন’ হট্টগোল হয়। ওই দিন আদালতে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থার মেডিকেল প্রতিবেদন দাখিলের কথা ছিল। কিন্তু সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন দিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময় আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে মেডিকেল প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়ে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির জন্য ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।

ওইসময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, বৃহস্পতিবার না, শুনানিটা রোববার দিন, না হয় সোমবার দিন করেন। তখন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলতে থাকেন, বৃহস্পতিবার না, বৃহস্পতিবার না। রোববার শুনানির দিন ধার্য করা হোক।

এক পর্যায়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা চিৎকার ও হট্টগোল করতে থাকেন। এর কাউন্টারে আদালতে উপস্থিত আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরাও চিৎকার করতে থাকেন। পরে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলতে থাকেন, আমরা কোর্ট থেকে যাব না।

এমন চিৎকার ও হট্টগোলের প্রেক্ষাপটে সকাল ১০টায় এজলাস থেকে চলে যান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। বিচারপতিরা চলে যাওয়ার পরও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা আদালত কক্ষে বসে থাকেন।

ওই ঘটনার গত ৮ ডিসেম্বর আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী নিলু সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, আপিল ও হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারদ্বয়কে একটি আইনি নোটিশ পাঠান। ওই নোটিশ অনুযায়ী কোর্ট রুমে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাদেরকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।
এদিকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে আটটি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

আজ সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বিষয়টি মনিটরিং করেছেন। সকালে প্রথমবারের মতো সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হয়।

দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলার ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে আটটি শক্তিশালী সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন