রাজাকারের তালিকায় নাম থাকায় হতবাক টিপু

গেলো রোববার (১৫ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

প্রকাশিত ওই তালিকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপুসহ পাঁচজনের নাম রয়েছে। অন্যরা হলেন- অ্যাডভোকেট মহসিন আলী, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, তৎকালীন জেলা প্রশাসক আব্দুর রউফ ও পুলিশ কর্মকর্তা এস এস আবু তালেব।

রাজশাহী বিভাগে স্বাধীনতাবিরোধীদের এক থেকে ১৫৪টি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এসব তালিকায় কয়েকশ ব্যক্তির নাম রয়েছে। যাদের কয়েকজনের নাম দ্বিতীয়বারও রয়েছে।

৮৯ নম্বর তালিকায় (ক্রমিক নম্বর ৬০৬) থাকা এই পাঁচজনের মন্তব্যের ঘরে লেখা আছে তাদের অব্যাহতি দিতে জেলা কমিটি আবেদন করেছিল। এর বাইরে কোনো তথ্য নেই।

এ ঘটনায় বিস্মিত-হতবাক গোলাম আরিফ টিপু।

এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যে কাজ করেছে তা সকলের জন্য বিস্ময়কর, লজ্জাজনক। আর এর মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম যথাযথভাবে হচ্ছে না। এর পরিণতিতে জিনিসটি এইভাবে হয়েছে।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তালিকায় আসা নামটি তাকে মিন করেই দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দেশের নাগরিক হিসেবে আমি লজ্জিত। মন্ত্রণালয় তাচ্ছিলের সঙ্গে এই কাজটি করেছে। এর দায়ভার তাদের নিতে হবে।

তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি আন্দোলনে যার ভূমিকা ছিল। তাকে কারা কেন এই তালিকায় নিয়ে এসেছে এর তদন্ত করে জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে।

অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।

১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের সময় রাষ্ট্রভাষা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, রাজশাহীর তিনি যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বেই মূলত রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫ সদস্যবিশিষ্ট স্টিয়ারিং কমিটির অন্যতম সদস্যও ছিলেন টিপু।

ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে একুশে পদক প্রদান করে।

এছাড়া অ্যাডভোকেট মহসিন আলী ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে পরিচিত ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন