আওয়ামী লীগ সরকারে না থেকেও প্রভাবশালী যারা

আওয়ামী লীগ সরকার তার ১ বছর পূরণ করলো আজ। ১ বছরের ভালো মন্দ মিলিয়েই আওয়ামী লীগ সরকার কাটিয়েছে। এই সময় রাজনৈতিক চাপ না থাকলেও বিভিন্ন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, সামাজিক অস্থিরতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে অস্বস্তি ছিল। আর এই সব অস্বস্তি দূর করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

আওয়ামী লীগের ১ বছরে যারা মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ছিলেন না তারপরও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন অনেকে। যারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংকট এবং সমস্যায় যাদেরকে সক্রিয় দেখা গেছে বা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যাদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন বলে প্রকাশিত হয়েছে। এরকম কয়েকজনকে নিয়েই এই প্রতিবেদন;

সালমান এফ রহমান

সালমান এফ রহমান গত ৩০ শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এমপি হন এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিষয়ক উপদেষ্টা। কিন্তু অন্যান্য উপদেষ্টারা নিষ্ক্রিয় থাকলেও সালমান এফ রহমানকে এবছর সরব দেখা গেছে। বিশেষ করে, বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সুযোগ-সুবিধা, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। এমনকি অর্থমন্ত্রী যখন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সাথে বৈঠক করেছেন, সেখানেও সালমান এফ রহমানের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়। সালমান এফ রহমান বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য সারা বছর সরব ছিলেন।

শাজাহান খান

গত ৩০ শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর শাজাহান খান মন্ত্রীত্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু গত বছরের শেষে এসে শাজাহান খান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামভুক্ত হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। তবে সারাবছর শাজাহান খানের প্রভাব ছিল। বিশেষ করে, নিরাপদ সড়ক আইন করার পর শাজাহান খানের প্রভাব দৃশ্যমান হয়ে ওঠে এবং তিনি রীতিমত সরকারকে জিম্মি করে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট পালনের নেতৃত্ব দেন। তার কারণেই নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া তিনি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা ইলিয়াস কাঞ্চনের সাথে বিবাদে জড়িয়েও আলোচনায় আসেন।

শেখ ফজলে নূর তাপস

গত দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাংসদ শেখ ফজলে নূর তাপস তেমন আলোচনায় ছিলেন না। কিন্তু এবার শুরু থেকেই তাপস সরব ছিলেন। বিশেষ করে শুদ্ধি অভিযানের সময় সম্রাটকে কেনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতির মূল হোতা আবদুল হাই বাচ্চুকে কেনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না এবং দুদক চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করে তিনি আলোচনায় ছিলেন। এক বছর পূর্ণ না হতেই তিনি ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদের জন্য আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান। এখন তিনি সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু নীতি নির্ধারক মহলে তার প্রভাব অনেকটা বেড়েছে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

মাশরাফি বিন মুর্তজা

মাশরাফি বিন মুর্তজা এবারই প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েই তিনি সরব ছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য ঝটিকা সফর করে তিনি আলোচিত হন। এমপি হিসেবে তিনি একটি ভিন্নমাত্রা এবং ভিন্ন ভাবধারা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তরুণদের কাছে এই সংসদ সদস্য আলোচিত ছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কারণে তাকেও একজন প্রভাশালী এমপি হিসেবেই মনে করা হয়।

শেখ হেলাল

শেখ হেলাল একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি মন্ত্রী না হলেও সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলে তার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। সরকারের অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে তিনি পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এছাড়া আরো কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি রয়েছেন যারা সরকারে না থেকেও মন্ত্রীদের চেয়ে ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালী হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন গত এক বছরে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এমনটাই মনে করেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন