অর্ডার অব দ্যা ব্রিটিশ এম্পায়ার (এমবিই) সদস্য মনোনীত জগন্নাথপুরের আশরাফ

মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
২০২০ সালে যুক্তরাজ্যে নতুন বছরের সম্মানিত তালিকায় জগন্নাথপরের মোহাম্মদ আশরাফ আলীকে অর্ডার অব দ্যা ব্রিটিশ এম্পায়ার (এমবিই) এর সদস্য পদে মনোনীত করা হয়েছে ।
২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শনিবার আনুষ্টানিক ভাবে সমাজের জন্য অসাধারণ অর্জন এবং উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বিকৃতিস্বরূপ  তার নাম ঘোষনা করা হয়েছে।
 জানা যায়, বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কৃতি সন্তান  মোহাম্মদ আশরাফ আলী মানুষকে শিক্ষিত করার মাধ্যমে মুসলিম বিরোধী কুসংস্কারের বিরোদ্ধে লড়াই এবং সম্ভাব্যভাবে বিচ্ছিন্নতা এবং কিছু তরুণ মুসলমানদের মধ্যে সহিংস উগ্রপন্থার প্রলোভনকেও সামাল দিতে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন ।
তার পিতৃ এবং মাতৃকালীন পরিবার দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর শহরের হবিবপুর থেকে ১৯৫০ দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৬০ দশকের শুরুর দিকে  তার পরিবার দেশান্তর হতে শুরু করে। হবিবপুর গ্রামটি তৈরি হওয়ার পর থেকেই তার পূর্বপুরুষ অন্যতম পারিবারিক বাসিন্দা ছিলেন।
আশরাফ আলীর সম্প্রসারিত পরিবার এখনও তাদের গ্রামের পৈতৃক জমিতে বসবাস করেন যা হবিবপুর গ্রামের মাঝখানে সাধু ভদ্র বাড়ি নামে পরিচিত। আশরাফ আলী যুক্তরাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন । হিসাবরক্ষণের উপর উচ্চ শিক্ষা ডিপ্লোমা অ্যাকাউন্টিংয়ে ডিপি.এইচই, এবং ফিনান্সে ডিগ্রি অর্জন করেন । পরে গণিত বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা (পিজিসিই) স্নাতক অর্জন সহ শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত এবং শিক্ষায় সিনিয়র ম্যানেজম্যান্ট হিসাবে অগ্রসর হন ।
তিনি বৃটিশ সাম্রাজের সবচেয়ে দুর্দান্ত অর্ডার হল, বৃটিশদের শৌখিনতার অর্ডার চারুকলা এবং বিজ্ঞানদের উপর পুরস্কারের অবদান, দাতব্য এবং কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করা সহ সিভিল সার্ভিসের বাহিরেও জনসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন । মোহাম্মদ আশরাফ আলীর পৈতৃক পিতামহ হাজী ইদ্রিস উল্লাহ যিনি ১৯৮৯ সালে ইন্তেকাল করেন। তিনি সবার কাছে অত্যান্ত ধার্মিক ও সৎ লোক হিসাবে পরিচিত ছিলেন এবং হবিবপুর গ্রামের সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন।
এমবিএ পদকে মনোনীত মোহাম্মদ আশরাফের বাবা হাজী আসাব আলী একজন অবসরপ্রাপ্ত । অবসর নেয়ার আগে তিনি যুক্তরাজ্যের একজন প্রতিষ্ঠিত রেস্তোরার মালিক ছিলেন । তিনি প্রথমে মতিরাজ ইন্ডিয়ান রেস্তোরা যা গ্রেটার ম্যানচেস্টারের যাডক্লিফ শহরে, সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন ।
 বর্তমানেও  সমাজ সেবার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে রেস্তোরা ব্যবসা সহ বাংলাদেশের রাজধানি ঢাকায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে সফলতার সাথে হোটেল ওসমানী ইন্টারন্যাশনাল পরিচালনা করে আসছেন । মোহাম্মদ আশরাফ আলী বিবাহিত এবং তাঁর একটি সন্তান রয়েছে । তাঁর অর্ধাঙ্গীও বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত। নিজের পরিবারের মত স্ত্রীর পরিবারও ১৯৬০ এর দশকে জগন্নাথপুর শহরের কেশবপুর গ্রাম থেকে দেশান্তরিত হয়েছিলেন । তাঁর শশুর হাজী আরিফ উল্লাহ তিনি নিজ গ্রামে জনসেবায় বেশ সম্মানিত ।
নতুন বছরের সম্মান তালিকায় এমবিই সম্মানে ঘোষিত মোহাম্মদ আশরাফ আলী একজন বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী হিসাবে যুক্তরাজ্যে তাঁর বেশ সুনাম রয়েছে । জনসেবার পাশাপাশি বাংঙ্গালী কমিউনিটির সকল উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করে রেখেছেন।
 তিনি প্রবাসে থাকলেও নাড়ীর ঠানে প্রায়ই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশে আসেন এবং এলাকার উন্নয়নে  তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বলেও জানা গেছে। এদিকে যুক্তরাজ্যে নতুন বছরের সম্মান তালিকায় মোহাম্মদ আশরাফ আলীকে এমবিই পদকে মনোনীত করায় এবং দেশের সম্মান বয়ে আনার জন্য তাকে বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে ।

আপনি আরও পড়তে পারেন