ভোটের মাঠে তাপস পত্নী আফরিন

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীজুড়ে। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো ঢাকা।প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় জমজমাট প্রচারণা চালাচ্ছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তার সহধর্মিণী আফরিন তাপস। শুক্রবার দিনভর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তিনি প্রচারণা চালান। গত এক সপ্তাহ ধরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন আফরিন তাপস।

গত সংসদ নির্বাচনেও তিনি তাপসের পক্ষে মাঠে নেমেছিলেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বামীর পক্ষে নৌকায় ভোট চেয়েছেন। ফলে ধানমণ্ডি, কলাবাগান, হাজারীবাগ ও নিউমার্কেট এলাকার বেশিরভাগ ভোটার তাকে চেনেন ও জানেন।.

এদিকে মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসের গণসংযোগে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত গণসংযোগে নামছে মানুষের ঢল। কর্মসূচি শুরুর আগেই নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো হচ্ছে হাজার হাজার নেতা-কর্মী। এছাড়া তাপস যখন গণসংযোগ করছেন তখন সংশ্লিষ্ট রাস্তা ও মহল্লার হাজার হাজার মানুষ হাত নাড়িয়ে তাকে অভিবাদন জানাচ্ছেন।

নগরীর বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগকালে দেখা গেছে, স্থানীয় কাউন্সিলর ও নেতা-কর্মীরা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। স্থানীয় কাউন্সিলরদের নির্বাচনী অফিসও নৌকার অফিস হিসেবে কাজ করছে।

গত ১০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার প্রচারণা শুরু করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। দক্ষিণের ৭০ নম্বর ওয়ার্ড ডেমরা আমুলিয়া মডেল টাউন, মেহেন্দিপুর বাজার, মীরবাগ থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন তিনি।

এর আগে ১০ জানুয়ারি সকালে গোপীবাগের সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে ডিএসসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। ১১ জানুয়ারি পুরান ঢাকার ওয়ারীর ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন (এই রোজ গার্ডেনে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়) থেকে প্রচারণা শুরু করেন তাপস। এলাকার অলিগলি ঘুরে দিনভর তিনি নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন।

১২ জানুয়ারি তাপস শান্তিনগর বাজার থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। দিনভর তিনি কাকরাইল, সেগুন বাগিচা ও রমনা এলাকায় গণসংযোগ করেন। হেঁটে হেঁটে ভোটারদের বাড়ি, দোকান, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিসে ভোট প্রার্থনা করেন।

১৩ জানুয়ারি রাজধানীর মানিক নগর বাসস্ট্যান্ড থেকে মুগদা স্টেডিয়ামসহ এর আশপাশের এলাকায় দিনভর প্রচার প্রচারণা চালান। এ সময় নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা এবং লিফলেট বিলিয়ে তিনি বলেন, ‘নৌকা মার্কায় আমাকে একটা ভোট দেবেন।’ প্রচারণাকালে এলাকার মানুষ যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ে।

১৪ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচরের ঝাউচরে বড় মসজিদ সংলগ্ন চৌরাস্তায় প্যান্ডেলে বক্তব্য দিয়ে প্রচারণা শুরু করেন তাপস। এ দিন তিনি ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রচারণা চালান। প্রচারণা শুরুর সময় পথসভা এক পর্যায়ে জনসভায় রূপ নেয়। হাজার হাজার মানুষের ‘নৌকা ও তাপস ভাই’ স্লোগানে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে।

১৫ জানুয়ারি মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার থেকে নেমে ধোলাইপাড় যাওয়ার রাস্তা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে কদমতলী এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী তাপসের সঙ্গে প্রচারণা চালান।

১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩ নম্বর গেট থেকে প্রচারণা শুরুর প্রাক্কালে তিনি পথসভায় বক্তব্য দেন। এরপর লালবাগ, হাজারীবাগ এলাকায় দিনভর গণসংযোগ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ‘নৌকা, নৌকা ও তাপস ভাই, তাপস ভাই’ স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে রাখে।

নির্বাচনকে ঘিরে রাজধানীতে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঢাক-ঢোল, ব্যান্ডের তাল আর বাশির সুরে নেচে গেয়ে উল্লাসের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের কর্মীরা।

প্রথমবারের মতো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ঢাকা ১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি টানা তিনবার ঢাকা-১০ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

গণসংযোগ চলাকালে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নগরবাসীকে। ঐতিহ্যের ঢাকাকে বাসযোগ্য ও সুন্দর করা, মশক নিধন, ময়লা আবর্জনা থেকে সবকিছু দৈনন্দিন ভিত্তিতে পরিচালনা, হটলাইন, ২৪ ঘণ্টা নগর ভবন খোলা রাখা, প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে সব মৌলিক নাগরিক নগরবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষা নদীর পাড়ে আট লেন রাস্তা করে ঢাকার সৌন্দর্যকে আরও বৃদ্ধিসহ বেশকিছু প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন তিনি।

ফজলে নূর তাপস বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে নৌকার পক্ষে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা পাঁচ ভাগে বিভক্ত করে উন্নয়নের রূপরেখা দিয়েছি যা ঢাকাবাসী সাদরে গ্রহণ করেছে। আমার বিশ্বাস ৩০ জানুয়ারি বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন