বিদ্রোহী নিয়ে বিপাকে আ.লীগ

বিদ্রোহী নিয়ে বিপাকে আ.লীগ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ওমর-বিন-আব্দাল-আজিজ। এবারও তিনি কাউন্সিলর পদে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থন পেয়েছেন। কিন্তু ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাগর আহমেদও একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

একই ধরনের চিত্র ২৬ নম্বর ওয়ার্ডেও। বর্তমান কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান ওরফে মানিক আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন। এই ওয়ার্ডে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন হাসিব উদ্দিন। দুই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বলছেন, বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিপাকে পড়েছেন আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্রার্থীরা। ভোটের আগে বিদ্রোহীরা মাঠ না ছাড়লে বিএনপি–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা সুবিধাজনক অবস্থায় চলে যাবেন।

এদিকে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থী আলতাফ হোসেন। এতে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্রার্থী আনোয়ার ইকবাল।

২৫ নম্বর ওয়ার্ড

জগন্নাথ সাহা রোড, কাজী রিয়াজুদ্দিন রোড, আতশ খান লেন, লালবাগ রোড, শেখ সাহেব বাজার এলাকা নিয়ে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি আনোয়ার ইকবালকে সমর্থন দেয় আওয়ামী লীগ।

অন্যদিকে আলতাফ হোসেনকে সমর্থন দেয় বিএনপি। কিন্তু গত ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন তিনি। এতে আনোয়ার ইকবালকে বিজয়ী ঘোষণা করেন ডিএসসিসির নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন।

২৬ নম্বর ওয়ার্ড

আজিমপুর রোড, পলাশী, বিসি দাস স্ট্রিট, নীলক্ষেত তুলা মার্কেট, ঢাকেশ্বরী রোড, লালবাগ রোডের একাংশ নিয়ে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড।

এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ছয়জন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান। রেডিও প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক। ২০১৫ সালে তিনি দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে এই ওয়ার্ডে বিজয়ী হন। এবার তাঁর বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন হাসিব উদ্দিন। তিনি লড়ছেন ঘুড়ি প্রতীক নিয়ে। হাসিবের বাবা আলীম উদ্দিন ও মা পারভীন আলীম এই ওয়ার্ডে কমিশনার ছিলেন। হাসিব উদ্দিন বলেন, ‘আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। দলের সমর্থন চেয়ে আবেদন করেছিলাম, কিন্তু পাইনি। তাই স্বতন্ত্র নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান বলেন, ‘আমি শহীদ আবদুল আলীম মাঠ, রসুলবাগ শিশুপার্ক আধুনিকায়ন করেছি। এবার নির্বাচিত হলে আজিমপুরে বিদ্যমান পাবলিক টয়লেটটি ভেঙে আধুনিকায়নসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করব।’

২০০২ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই ওয়ার্ডের কমিশনার ছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি মীর আশরাফ আলী। এবার তিনি দল থেকে সমর্থন পেয়েছেন। মিষ্টি কুমড়া প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে প্রথমে নাগরিকদের মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব।’

২৭ নম্বর ওয়ার্ড

হোসেনি দালান রোড, নাজিমুদ্দিন রোড, গিরদা উর্দু রোড, চক সার্কুলার রোড, আজগর লেন এলাকা নিয়ে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড।

এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর ওমর-বিন-আব্দাল আজিজ। তিনি দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক মিষ্টি কুমড়া। তাঁর বাবা এম এ আজিজ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন। অন্যদিকে এই ওয়ার্ডে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহসম্পাদক সাগর আহমেদ। তিনি লালবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন একসময়।

সাগর আহমেদ বলেন, ‘দলের তৃণমূলের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। আশা করি, বিপুল ভোটে জয়ী হব।’ তবে দলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও নিজের জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী ওমর-বিন-আব্দাল-আজিজ।

ওয়ার্ডে বিএনপির সমর্থন পেয়েছেন দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসাধারণ সম্পাদক শাহিদা মোর্শেদ। তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে জনগণের জরুরি চাহিদা পূরণে কাজ করব।’

 

আপনি আরও পড়তে পারেন