বিধানসভায় সিএএ প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) প্রত্যাহারের প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার। আজ মঙ্গলবার ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়, ২৭ জানুয়ারি রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে এই সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব আলোচনার জন্য তোলা হবে ।

গতকাল সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নতুন নাগরিকত্ব আইন সিএএ প্রত্যাহারের দাবিতে রাজ্য বিধানসভায় আমরা দুই-এক দিনের মধ্যে প্রস্তাব গ্রহণ করব।’ উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

তবে বাম দল এবং কংগ্রেসের মতো আলাদা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

মমতার গতকালের এই মন্তব্যের পর সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র দাবি তুলেছেন, এবার রাজ্য সরকার এই সিএএর বিরুদ্ধে কেরালার মতো মামলা করুক ভারতের সুপ্রিম কোর্টে।

পাশাপাশি বিজেপির রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ‘একটা আইন সংসদে সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়ার পর ওই আইনের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনা বিধিসম্মত নয়। কারণ একটা আইন যখন পাস হয়, তখন সেটা হয়ে যায় দেশের আইন। সেটা মানব না, এই মর্মে কোনো রাজ্যের বিধানসভায় প্রস্তাব নেওয়া অসাংবিধানিক।’

এর আগে বাম দল ও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাজ্য বিধানসভায় সিএএ প্রত্যাহার-সংক্রান্ত প্রস্তাব আনার পক্ষে নোটিশ দেওয়া হয়। ৯ জানুয়ারি রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে কংগ্রেস ও বাম দলের পক্ষ থেকে সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন বাম পরিষদীয় দলের নেতা বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। তবে সে সময় খেপে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আপনি কে? আপনার কথা কেন শুনব? জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) নিয়ে সকলের আগে প্রস্তাব পাস করেছে এই রাজ্যের বিধানসভাই।’

এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা ও কংগ্রেস বিধায়ক আবদুল মান্নান বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বরে আমাদের চাপাচাপিতে রাজ্য বিধানসভায় গৃহীত হয়েছিল এনআরসি-বিরোধী প্রস্তাব। অথচ এ মাসের ৯ তারিখ আমাদের জমা দেওয়া সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার প্রশ্ন তুললে বলা হলো, আমাদের কথা শুনবে কেন? এখন মানুষের মনোভাব বুঝতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার কথা বলছেন।’

দেশজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) নিয়ে আন্দোলন তুঙ্গে। বিভিন্ন রাজ্য এই আইন কার্যকর না করার ঘোষণা দিচ্ছে। বামশাসিত দক্ষিণী রাজ্য কেরালা বিধানসভায় প্রথম পাস করা হয় সিএএ প্রত্যাহারের প্রস্তাব। সেই সঙ্গে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয় সিএএ প্রত্যাহারের দাবিতে মামলা। পাঞ্জাব রাজ্য সরকারও রাজ্য বিধানসভায় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাস করে। তবে এখনো এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কোনো মামলা করেনি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন